পবিত্র আল-আকসা মসজিদ এক হাজারের বেশি ইহুদি উপাসককে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরায়েল। একসঙ্গে সর্বোচ্চ ১৮০ জন প্রার্থনা করতে পারবেন। ইসরায়েলের এ সিদ্ধান্তে সেখানকার স্থিতাবস্থা হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) একদল ইহুদিকে ইসরায়েলি বাহিনীর নিরাপত্তা আল-আকসার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।
এর আগে, একসঙ্গে ৩০ জনের বেশি ইহুদি আল-আকসায় ইবাদত করতে পারতেন না। তবে এবারই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ইহুদিকে অনুমতি দেওয়া হলো।
১৯৬৭ সালে আল-আকসা নিজেদের দখলে নেয় ইসরায়েল। চুক্তি অনুযায়ী, সেখানে মুসলমানরা নামাজ আদায় করতে পারেন। আর ইহুদিরা প্রবেশ করতে পারেন, তবে প্রার্থনার অনুমতি নেই তাদের। এরপরও সেখানে অবস্থিত ‘টেম্পল মাউন্টে’ প্রার্থনা করে থাকেন ইহুদিরা।
আল-আকসা মসজিদ পরিচালনাকারী সংস্থা ইসলামিক ওয়াকফ জানিয়েছে, বুধবার ১২’শ ইহুদি ইসরায়েলি সেখানে প্রবেশ করেছে। গত সপ্তাহে পাসওভার ছুটি শুরুর পর থেকে অন্তত চার হাজার লোক পবিত্র এই স্থানে অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে।
জেরুজালেমের পুরাতন শহরের লায়ন্স গেটের প্রবেশপথে হাজার হাজার ইহুদি উপাসককে নাচ-গান করতে দেখা গেছে। এবং মুসলিমদের মসজিদে প্রবেশ করতে বাধা দেন তারা।
ওয়াকফের আন্তর্জাতিক বিষয়ক পরিচালক আউনি বাজবাজ মিডল ইস্ট আই’কে বলেন, বুধবারের দৃশ্য আগের দিনগুলোর চেয়ে আলাদা। অর্থাৎ সম্পূর্ণ ভীতিকর পরিস্থিতি ছিল। আজ যা ঘটেছে তা ধর্মীয় উদ্দেশ্যে নয় বরং ক্ষোভ সৃষ্টির জন্য করা। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৩ সালে এই স্থানে প্রবেশকারীর সংখ্যা ছিল ২৫৮, আজ বৃদ্ধি পেয়ে হাজার ছাড়াল। এ বিষয়টিকে আমরা (ইসলামিক ওয়াকফ হিসেবে) এমনভাবে মোকাবেলা করব, যা আগে কখনও করিনি।
ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, ‘অফিসাররা দর্শনার্থীদের নিয়ম ও দলের আকার অনুসারে টেম্পল মাউন্ট পরিদর্শনে নিরাপত্তা দিয়েছে মাত্র।
জেরুজালের প্রধান রাব্বিনাত ঘোষণা করেছিলেন, টেম্পল মাউন্টে ‘আধ্যাতিকভাবে পূতপবিত্র’ ইহুদি ছাড়া অন্য কেউ প্রার্থনা করতে পারবেন না। তবে বর্তমানে তা প্রায় অসম্ভব। অনেক অর্থডক্স ইহুদি এ ব্যাপারে ভিন্নমত প্রকাশ করে বলেছেন, এটা বৈষম্যমূলক আচরণ। সবারই প্রার্থনার অধিকার রয়েছে।
এর আগে কয়েকজন মন্ত্রীও, বিশেষ করে দেশটির নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির ইহুদিদের সরাসরি আল-আকসায় প্রার্থনা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এমনকি উগ্র ডানপন্থী মন্ত্রীকে বেশ কয়েকবার কমপ্লেক্সে প্রবেশের ভিডিওও দেখানো হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ অবস্থায় পরিস্থিতি সহিংস রূপ নিতে পারে। এবং জেরুজালেমের স্থিতাবস্থার পরিবর্তন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘টেম্পল মাউন্টে স্থিতাবস্থা পরিবর্তিত হয়নি এবং পরিবর্তিত হবে না’। ১৭৫৭ সালের অটোমান ডিক্রি অনুযায়ী, আল-আকসায় অমুসলিমদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। এবং ইহুদিরা পশ্চিম প্রাচীরে প্রার্থনা করার অধিকার রাখে।
গত কয়েক বছর ধরে আল-আকসায় ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের ঘন ঘন প্রবেশ ও প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। কিছু ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী দ্রুত এখানে ‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন। আর পদক্ষেপের জন্য ইসলামের তিনটি পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদ ভেঙে ফেলতে হবে।
‘থার্ড টেম্পল’ নির্মাণের পক্ষে উগ্র ডানপন্থী গোষ্ঠী টেম্পল মাউন্ট প্রশাসন গত মঙ্গলবার জানিয়েছে, ‘ ইহুদিতের ধর্মীদের উৎসব পাসওভারের প্রথম তিন দিনে আল-আকসা প্রাঙ্গণে ৩ হাজার উপাসক উপস্থিত ছিলেন’।

 
                             
                                    


 সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন 
                                     
                                     
                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                                                                                     
                             
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
        
       -20251025002118.webp) 
        
        
        
        
        
        
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন