বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ১২:০১ পিএম

কাশ্মীর সীমান্তে প্রতিদিনের ফাঁকা গুলি!

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ১, ২০২৫, ১২:০১ পিএম

কাশ্মীর সীমান্তে প্রতিদিনের ফাঁকা গুলি!

সীমান্তে বেড়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ছবি: সংগৃহীত

কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিদিনের গুলিবর্ষণ এখন আর বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। বরং এটি দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার প্রতিফলনই বটে। 

গত ২২ এপ্রিল, পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর নতুন করে সীমান্ত পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠেছে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপরও প্রশ্ন উঠেছে দুদেশের।

সংঘর্ষের প্রকৃতি ও তীব্রতা

গত সাত দিন ধরে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ভারত-পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে ছোট অস্ত্র ও মর্টার দিয়ে পাল্টাপাল্টি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটছে। 

ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, পাকিস্তান বিনা প্ররোচনায় গুলি চালানো শুরু করছে, যার জবাবে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানানো হচ্ছে শুধু। 

ভারত সূত্রে জানা গেছে, এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। তবে পাকিস্তান পক্ষ তাদের ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি। এ ছাড়া গুলিবর্ষণের ঘটনা নিয়েও তাদের তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। 

রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পটভূমি

কাশ্মীর ইস্যু ভারত ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল অন্তরায়। ২০১৯ সালে ভারতের সরকার কর্তৃক জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। 

এরপর থেকেই সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে, যদিও মাঝে কিছু শান্তিচুক্তি এবং যুদ্ধবিরতির উদ্যোগও দেখা গেছে। বর্তমানে সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, কূটনৈতিক প্রক্রিয়াগুলো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না।

National Security Advisory Board Revamped Amid Tensions Over Pahalgam Attack

মানবিক ও সামাজিক প্রভাব

সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসরত সাধারণ জনগণ প্রতিনিয়ত আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। গুলিবর্ষণের ফলে বহু পরিবার নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। 

শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষিকাজসহ দৈনন্দিন জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ মানুষের। এ ঘটনায় শিশুদেরও মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এবং সীমান্ত এলাকায় দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা।

আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

দুই প্রতিবেশী পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান এ উত্তেজনা কেবল উপমহাদেশ নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য হুমকি। 

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখন পর্যন্তও এ বিষয়ে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানালেও কার্যকর মধ্যস্থতার কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।

এই পরিস্থিতি যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে তা ভবিষ্যতে আরও বড় সংঘাতের দিকে গড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

কূটনৈতিক পর্যায়ে নতুন করে সংলাপ শুরু না হলে এই উত্তেজনা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়তে পারে।

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর সীমান্তে চলমান সংঘর্ষ দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। 
গত ২২ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে ভারতীয় কাশ্মীরে এক সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন হিন্দু পর্যটক নিহত হন। এই হামলার পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা সীমান্তে প্রতিদিনের গুলিবর্ষণ ও সামরিক প্রস্তুতি বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রতিফলিত হচ্ছে।

হামলার পরবর্তী পরিস্থিতি

ভারত সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। 

হামলার পর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশ ছাড়তে নির্দেশ দিয়েছে এবং তাদের ভিসা বাতিল করেছে। পাশাপাশি, গুরুত্বপূর্ণ জলবণ্টন চুক্তিও স্থগিত করেছে ভারত। 

 এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানি ভারতের এবং ভারত পাকিস্তানের বিমান চলাচলের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দিয়েছে। এ ছাড়াও পাকিস্তান পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে তাদের সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় দেশকে উত্তেজনা প্রশমিত করার আহ্বান জানিয়েছে। পাকিস্তান জানিয়েছে, তাদের কাছে ‘বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্য’ রয়েছে যে ভারত আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক আক্রমণ চালাতে পারে। এই পরিস্থিতিতে উভয় দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায়, ভুল হিসাবের ঝুঁকি অত্যন্ত উচ্চ।

কাশ্মীরের দুর্দশা

পাক-ভারত সীমান্তের উত্তেজনার কারণে কাশ্মীরের পর্যটন শিল্পে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। হামলার পর ৪৮টি সরকার অনুমোদিত পর্যটন রিসোর্ট বন্ধ করা হয়েছে, যার ফলে ১০ লাখেরও বেশি বুকিং বাতিল হয়েছে। 

এছাড়া, প্রায় ২,০০০ জনকে আটক করা হয়েছে এবং সন্দেহভাজন জঙ্গিদের বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং শান্তিপূর্ণ নাগরিকদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

Kashmir attack updates: Indian forces blow up homes after Pahalgam attack |  News | Al Jazeera

ভবিষ্যৎ কি?

উত্তেজনা প্রশমিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজে বের করা উচিত। 

যেহেতু উভয় দেশই পারমাণবিক অস্ত্রধারী, তাই ভুল হিসাবের ফলে বৃহত্তর সংঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, কাশ্মীরের সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

এই মুহূর্তে, কাশ্মীরের পরিস্থিতি দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এক গুরুতর নিরাপত্তা সংকেত। উত্তেজনা প্রশমিত না হলে, এই অঞ্চলে নতুন করে সংঘাতের সূচনা হতে পারে, যা শুধু ভারত-পাকিস্তান নয়, বরং গোটা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!