কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সুড়ঙ্গ খননের ঘটনা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর গভীর সুড়ঙ্গ খনন করেছে, যেগুলো দিয়ে সশস্ত্র অনুপ্রবেশ ও ভবিষ্যৎ সামরিক সংঘাতে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ও সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ) জানায়, বর্তমানে এসব সুড়ঙ্গের তদন্ত চলছে। সীমান্তজুড়ে ৩৩ কিলোমিটার এলাকায় ‘সুড়ঙ্গবিরোধী অভিযান’ শুরু করা হয়েছে।
নিরাপত্তা সূত্র জানায়, পাকিস্তান এই সুড়ঙ্গ খননে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের ব্যবহার করছে, যারা এ ধরনের গোপন সামরিক কাজের জন্য প্রশিক্ষিত।
এই সুড়ঙ্গগুলোর মাধ্যমে মূলত ভারতীয় ভূখণ্ডে সন্ত্রাসীদের গোপনে প্রবেশ করানো, অস্ত্র পাচার এবং দ্রুতগতিতে সামরিক সদস্য মোতায়েনের সুযোগ তৈরির চেষ্টা চলছে।
২০২০ সালে এমনই একটি সুড়ঙ্গ উদ্ধার করে ভারতীয় বাহিনী, যার দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৫০০ মিটার এবং গভীরতা ৩০ মিটার। ওই সুড়ঙ্গের ভেতরে বাতাস চলাচলের জন্য পাইপলাইনও বসানো হয়েছিল।
সংবাদমাধ্যমটি আরও দাবি করেছে, ২০১৬ সালের নাগরোটা সেনাঘাঁটিতে হামলা ও ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার মতো ঘটনা ঘটানোর পেছনেও এমন সুড়ঙ্গ ব্যবহৃত হয়েছিল। এসব সুরঙ্গ দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পাকিস্তান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর গোপন চলাচলের পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
বিএসএফ সূত্র আশঙ্কা করছে, আরও অনেক সুড়ঙ্গ এখনো মাটির নিচে লুকিয়ে রয়েছে, যেগুলো এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে সীমান্ত সুরক্ষা আরও জোরদার করতে বাধ্য হচ্ছে ভারতীয় বাহিনী।
কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর এই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। কুপওয়ারা, বারামুল্লা ও জম্মুর বিভিন্ন সেক্টরে টানা পাঁচ দিন ধরে গোলাগুলি অব্যাহত রয়েছে। সীমান্তবর্তী গ্রামের মানুষজন আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
বারামুল্লার উরি সেক্টরের চুরুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা লালদির বলেন, ‘প্রতিদিন মনে হয়, যেকোনো মুহূর্তে গোলা এসে পড়বে। ভয় আর আতঙ্কে দিন কাটছে।’
এদিকে হামলার ঘটনার পর কাশ্মীরি জনগণের ওপর বৈরী দৃষ্টিভঙ্গি ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে। এর ফলে কাশ্মীরি মুসলিম ছাত্রছাত্রীদের ওপর হামলা, হুমকি ও সামাজিকভাবে একঘরে করে দেওয়ার ঘটনা বাড়ছে। এতে সামাজিক বৈষম্য ও দমন-পীড়নের চিত্র আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন :