সিরিয়ার প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রগুলোতে পারস্পরিক চুক্তির ভিত্তিতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে তুরস্কের কূটনৈতিক সূত্র।
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও হুমকির মূল্যায়নের ভিত্তিতে সিরিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার যেকোনো বিষয়ে তুরস্ক আলোচনায় প্রস্তুত বলেও জানিয়েছে তারা।
তুরস্কের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, ‘বাশার আল-আসাদের পতনের পর সিরিয়া একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় প্রবেশ করেছে। দেশটির জনগণ বর্তমানে ১৪ বছরের সংঘাতের ক্ষত সারিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি রাজনৈতিক রূপান্তরের পথ তৈরি করছে।’
‘তুরস্ক সরকার এই রূপান্তর প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে এবং সিরিয়ার জনগণের নেতৃত্বে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসনিক কাঠামো গঠনের প্রত্যাশা করে নিশ্চিত করেন তারা।’
তুরস্ক বলেছে, সিরিয়ার ভৌগোলিক অখণ্ডতা, সন্ত্রাসমুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং দেশের পুনর্গঠনের লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পক্ষে কাজ করছেন তারা।
আঙ্কারা বিশ্বাস করে, সিরিয়াকে সহায়তা ও গভীরতর সম্পৃক্ততার মাধ্যমেই দেশটি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব।
সম্প্রতি সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা কমেছে বলে জানায় সূত্রগুলো। তবে দেশব্যাপী কিছু বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ ঘটছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়াতে তাদের সামরিক উপস্থিতি সীমিত করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে এবং পরিস্থিতি বিবেচনায় ধাপে ধাপে এটি বাস্তবায়নের কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি, সিরিয়া-ইরাক সীমান্তে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে তারা।
তুরস্ক জানিয়েছে, এসডিএফ ও সিরীয় সরকারের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। কামিশলিতে ‘কুর্দি ঐক্য ও অবস্থান’ সম্মেলনে দেওয়া বার্তা সিরীয় সরকার প্রত্যাখ্যান করেছে।
আঙ্কারা বলেছে, তারা এমন কোনো উদ্যোগ মেনে নেবে না, যা সিরিয়ার একতা ও সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ন করে।
তুরস্ক আশা করে পিকেকে (PKK) জঙ্গি গোষ্ঠী দ্রুত অস্ত্র ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পথ গ্রহণ করবে। যদি সংগঠনটি স্বেচ্ছায় বিলুপ্ত না হয়, তবে আঙ্কারা বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণে প্রস্তুত।
তুরস্ক জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল ও সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে রাশিয়ায় পালিয়ে যান। এর ফলে সিরিয়ায় বাথ পার্টির দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটে।
পরবর্তীতে, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আহমেদ আল-শারার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠিত হয়।
সূত্র: আনাদালু এজেন্সি