ঢাকা শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫

সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখামাত্রই গু‍‍লি করার নির্দেশ ভারতের

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ০৬:০২ পিএম
সীমান্তে উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে ভারত। ছবি-সংগৃহীত

পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে মঙ্গলবার (৬ মে) মধ্যরাতে হামলা চালায় ভারত। এর একদিন পর সীমান্তবর্তী রাজ্য রাজস্থান ও পাঞ্জাবে সতর্কতা জারি করেছে ভারত। 

বৃহস্পতিবার (৮ মে) এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে যেকোনো ধরনের হামলার আশঙ্কায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত আছে। পুলিশ সদস্যদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে সীমিত করা হয়েছে জনসমাবেশ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে ১ হাজার ৩৭ কিলোমিটার সীমান্ত থাকা রাজস্থান রাজ্যে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সীমান্ত সম্পূর্ণরূপে সিল করে দেওয়া হয়েছে। কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপ দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের।

এনডিটিভি জানায়, উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে ভারতীয় বিমান বাহিনী। পশ্চিমাঞ্চলীয় সেক্টরে আকাশে যুদ্ধবিমান টহল দেওয়ার কারণে ৯ মে পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে যোধপুর, কিষানগড় এবং বিকানের বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচল। সক্রিয় করা হয়েছে এ অঞ্চলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

গঙ্গানগর থেকে কচ্ছের রণ পর্যন্ত আকাশপথে টহল দিচ্ছে সুখোই-৩০ এমকেআই জেট বিমান। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিকানের, শ্রী গঙ্গানগর, জয়সলমীর এবং বারমের জেলার স্কুলগুলো।

পুলিশ ও রেলকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। সীমান্তের কাছে ড্রোন-বিরোধী ব্যবস্থাও সক্রিয় করা হয়েছে। 

এদিকে, মধ্যরাত থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত জয়সলমীর এবং যোধপুর শহরে ব্ল্যাকআউটের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। ব্ল্যাকআউট উন্নত উচ্চগতির বিমানের জন্য সমস্যা তৈরি করে, যার ফলে শত্রু পাইলটদের আক্রমণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে, পাঞ্জাবের সমস্ত পুলিশ কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। জনসমাবেশ সীমিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। সীমান্তে উত্তেজনার কারণে সমস্ত সরকারি কর্মসূচি বাতিল করেছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানও।

মঙ্গলবার (৬ মে) পাকিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরের নয়টি স্থানে বিভিন্ন স্থাপনায় ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত।

নয়াদিল্লির দাবি, ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে হামলাটি ছিল পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ।

ভারত জোর দিয়ে দাবি করেছে, তারা পাকিস্তানের কোনো সামরিক স্থাপনায় আক্রমণ করেনি। তাদের আক্রমণের লক্ষ্য ছিল শুধু ভারতীয় মাটিতে হামলার পরিকল্পনা করার জন্য ব্যবহৃত ‘সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’ ধ্বংস করা।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, নয়াদিল্লির পদক্ষেপগুলো পরিমাপিত, অ-উত্তেজক, আনুপাতিক ও দায়িত্বশীল ছিল। তারা সন্ত্রাসী পরিকাঠামো ভেঙে ফেলা এবং ভারতে পাঠানোর সম্ভাবনা থাকা সন্ত্রাসীদের নিষ্ক্রিয় করার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে ‘যুদ্ধের পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করে এ ঘটনার যথার্থ জবাব দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, পাকিস্তানের 'যথাযথ জবাব দেওয়ার' পূর্ণ অধিকার রয়েছে।