‘আজ রাতটা ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণ’- জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এই বাক্য দিয়েই শুরু করলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২১ জুন রাতের এই ভাষণে ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইরানের ফোর্দো, নাটান্জ ও এসফাহান পরমাণু কেন্দ্রে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ব্যাপক তবে নিখুঁত হামলায়’ এই তিনটি স্থাপনাই ‘সম্পূর্ণ ও পুরোপুরি ধ্বংস’ করে দেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু সমৃদ্ধিকরণ সক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা এবং বিশ্বের এক নম্বর সন্ত্রাস-প্রশ্রয়দাতা রাষ্ট্রের পারমাণবিক হুমকি বন্ধ করা।’
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি ঘোষণা দেন, ‘আমি বিশ্ববাসীকে জানাতে পারি, এই হামলা ছিল একটি অসাধারণ সামরিক সাফল্য। ইরানের মূল পরমাণু কেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণ এবং পুরোপুরি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’
ট্রাম্পের ভাষণের সবচেয়ে বেশি আলোচিত অংশ ছিল ইরানকে সরাসরি উদ্দেশ করে উচ্চারিত হুঁশিয়ারি: ‘মধ্যপ্রাচ্যের দস্যু ইরানকে এখনই শান্তির পথে আসতে হবে। যদি তারা তা না করে, তাহলে ভবিষ্যতের হামলা হবে আরও ভয়ঙ্কর এবং অনেক সহজ।’
এই ভাষণের ঠিক আগে ট্রাম্প ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ লেখেন, ‘ফোর্দো, নাটান্জ ও এসফাহানে আমরা সফলভাবে হামলা চালিয়েছি। সব বিমান ইরানের আকাশসীমা ছাড়িয়ে নিরাপদে ফিরে এসেছে। ফোর্দোতে সম্পূর্ণ বোমার বোঝাই হামলা হয়েছে। এখন সময় এসেছে শান্তির। আমাদের মহান যোদ্ধাদের জন্য অভিনন্দন!’
ভাষণের এক পর্যায়ে তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে সরাসরি ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আমরা জানি এই তথাকথিত ‘সুপ্রিম লিডার’ কোথায় লুকিয়ে আছেন। তিনি আমাদের কাছে সহজ লক্ষ্য। তবে, আমরা এখনই তাঁকে হত্যা করব না। কিন্তু আমাদের ধৈর্য সীমায় এসে ঠেকেছে।’
এর আগে ট্রাম্প একটি পোস্টে সরাসরি লেখেন, ‘নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ!’
এতসব বক্তব্য ও পোস্টে স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানবিরোধী যুদ্ধে নামল এবং এই হামলাকে ট্রাম্প কেবল প্রতিশোধ নয়, বরং একটি ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চান।
তবে তার এই ভাষণ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি বয়ে আনবে না- বরং নতুন করে আগুনে ঘি ঢালার আশঙ্কাই বাড়িয়ে দিল।
তথ্যসূত্র: ট্রুথ সোশ্যাল, ইউটিউব ভাষণ, রয়টার্স, এএফপি, টাইমস অব ইসরায়েল
আপনার মতামত লিখুন :