মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাণিজ্য যুদ্ধে বিভিন্ন দেশের ওপর ‘পারস্পরিক শুল্ক’ হিসেবে ১০ শতাংশ থেকে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত নতুন শুল্ক আরোপের একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। “ফারদার মডিফাইং দ্য রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ রেটস” শীর্ষক এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র ৬৯টি বাণিজ্যিক অংশীদার দেশের নাম ও সংশ্লিষ্ট ‘সংশোধিত’ শুল্কহার তালিকাভুক্ত করেছে। এই আদেশ অনুযায়ী, বিশ্বের বহু দেশ ও অঞ্চলের পণ্যের ওপর এ শুল্ক কার্যকর হবে। শুক্রবার (১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
নতুন আদেশে সর্বোচ্চ ৪১ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে সিরিয়ার ওপর। এর পরেই আছে লাওস ও মিয়ানমার। এশিয়ার দেশ দুটির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
ইউরোপিয় ইউনিয়নের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও, এর আওতাভুক্ত নয় সুইজারল্যান্ড । ইউরোপের এ দেশটির ওপর ৩৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। ইরাক ও সার্বিয়ার ওপর আরোপ করা হয়েছে ৩৫ শতাংশ শুল্ক। এছাড়া আলজেরিয়া, বসনিয়া হার্জেগোভিনা, লিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর আরোপ করা হয়েছে ৩০ শতাংশ শুল্ক।
এর বাইরে বৃহস্পতিবার রাতে (৩১ জুলাই) ট্রাম্প কানাডার কিছু পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের আরেকটি নির্বাহী আদেশে সই করেন। এতে বলা হয়, “উত্তর সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মাদক প্রবেশ রোধে কানাডা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি, বরং প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। এ কারণে ট্রাম্প কানাডার পণ্যে শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করেছেন।” তবে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তি (ইউএসএমসিএ)-এর আওতায় যেসব পণ্য অগ্রাধিকার পাবে, সেগুলোর ওপর নতুন শুল্ক প্রযোজ্য হবে না।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের মতো বড় কিছু বাণিজ্যিক অংশীদার দেশের পণ্যে প্রাথমিকভাবে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তবে ভারত ও তাইওয়ানের মতো দেশগুলোর ক্ষেত্রে শুল্কহার আরও বেশি— ভারতের ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ, তাইওয়ানের ক্ষেত্রে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ এসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা এখনও সেভাবে এগোয়নি।
এর আগে, ভিয়েতনামের ওপর ২০, দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। চীনের সাথে শুল্ক নিয়ে সমঝোতার সময় আছে ১২ আগস্ট পর্যন্ত।
হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, “আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কগুলোতে পারস্পরিক ন্যায্যতার অভাব রয়ে গেছে। এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১৪২৫৭-এর আওতায় ঘোষিত জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমি নির্দিষ্ট কিছু বাণিজ্য অংশীদার দেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপকে প্রয়োজনীয় ও উপযুক্ত মনে করছি।”