কাতারে হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বিমান হামলায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এ ঘটনায় তিনি খুবই অসন্তুষ্ট এবং বুধবার এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ বিবৃতি দেবেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘পুরো ঘটনাতেই আমি অসন্তুষ্ট। আমাদের অবশ্যই জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে হবে, তবে যেভাবে এটি ঘটেছে তাতে আমি একেবারেই খুশি নই।’
সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
এর আগে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিত এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ হামলাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা’ হিসেবে দেখছেন, যা যুক্তরাষ্ট্র বা ইসরায়েলের জন্য কোনো সুফল বয়ে আনবে না। যদিও তিনি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড নিয়ে সরাসরি নিন্দা করেননি, তবে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেছেন।
লেভিত জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী হোয়াইট হাউসকে এ হামলার বিষয়ে অবহিত করেছে। তবে বারবার প্রশ্ন সত্ত্বেও লেভিত বলেননি যে, ইসরায়েল আগেই যুক্তরাষ্ট্রকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছিল কি না। তিনি আরও জানান, ইসরায়েল কাতারের রাজধানী দোহায় একতরফাভাবে বোমাবর্ষণ করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও সার্বভৌম রাষ্ট্র কাতারের জন্য অপমানজনক।
পরে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘এটি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত ছিল, আমার নয়।’
তবে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ কাতারি কর্তৃপক্ষকে এ হামলার আগে সতর্ক করেছিলেন বলে দাবি করেন লেভিত। যদিও কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের আগাম কোনো সতর্কবার্তা দেওয়া হয়নি। একজন মার্কিন কর্মকর্তা যোগাযোগ করেছিলেন তখনই, যখন দোহায় ইসরায়েলি হামলার বিস্ফোরণ শুরু হয়েছিল।’
ট্রাম্প স্বীকার করেন যে, উইটকফের সতর্কবার্তা ‘খুব দেরিতে’ দেওয়া হয়েছিল, যা হামলা ঠেকাতে পারেনি। তিনি আরও জানান, কাতারের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি চূড়ান্ত করতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে নির্দেশ দিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, তিনি কাতারের আমির ও প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং তাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা কাতারের মাটিতে আর ঘটবে না।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ দাবি করেছেন, দোহায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো এ হামলা ন্যায্য ছিল, কারণ ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে যে হামলা চালিয়েছিল তার প্রতিশোধ এটি।
হামাস জানিয়েছে, দোহায় ওই হামলায় তাদের পাঁচ সদস্যসহ মোট ৬ জন নিহত হয়েছেন, তবে কেউ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা নন।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন