দখলকৃত পশ্চিম তীরে বুধবার ব্যাপক অভিযান চালিয়ে বহু ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে ‘ইসরায়েলি’ বাহিনী। এর মধ্যে জেরুজালেমের উত্তর-পশ্চিমের কুবেইবা শহরের মেয়র নাফেজ হামুদেহকে তার বাড়ি থেকে আটক করে সেনারা।
বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রামোট বসতিতে ছয় ‘ইসরায়েলি’ নিহত হওয়ার পর এলাকাজুড়ে তিন দিনের সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয় বলে জানিয়েছে ‘ইসরায়েলি’ বাহিনী। অভিযান চালিয়ে একটি আবাসিক ফ্ল্যাট ধ্বংস করার পাশাপাশি জলপাই বাগান উচ্ছেদ করেছে তারা।
কুবেইবা, বিদ্দু ও কাতান্নার বাসিন্দারা জানান, সেনারা বহু বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ ও ভাঙচুর চালিয়েছে। এ সময় কিশোররা পাথর ছুড়লে ‘ইসরায়েলি’ বাহিনী গুলি ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে।
স্থানীয়দের মতে, সামরিক চৌকিতে যানবাহন ও পরিচয়পত্র পরীক্ষা করায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। রামাল্লায় কুবের শহরে অভিযান চালিয়ে দুই ভাইকে আটক করা হয় এবং তাদের গাড়ি জব্দ করা হয়। আল-রাম শহরে পরিবারের সামনেই আরেকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলীয় জেনিনে এক ফিলিস্তিনিকে এবং নাবলুসের কাছে কাফর ক্বালিল গ্রামে আরেকজনকে আটক করে সেনারা। অন্যদিকে, জেনিনের পশ্চিমে ইয়ামুন ও আরাকা শহরে ‘ইসরায়েলি’ বুলডোজার দিয়ে ডজনখানেক জলপাই গাছ উপড়ে ফেলা হয়।
এ ছাড়া, তুলকারেমের কাছে কাফর আব্বুশ শহরে গত বছর আটক হওয়া দুই ফিলিস্তিনি ভাইয়ের মালিকানাধীন একটি ফ্ল্যাট বিস্ফোরক বসিয়ে ধ্বংস করে দেয় সেনারা। তাদের বিরুদ্ধে ক্বালকিলিয়ার কাছে গুলিবর্ষণে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
জেরুজালেম লিগ্যাল এইড অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস সেন্টার এসব ধ্বংসযজ্ঞের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সংগঠনটি বলেছে, ‘অভিযোগের ভিত্তিতে পরিবারের সদস্যদের শাস্তি দেওয়া চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের অধীনে নিষিদ্ধ সমষ্টিগত শাস্তির শামিল।’
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ‘ইসরায়েল’-এর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিম তীরে অন্তত ১ হাজার ২০ ফিলিস্তিনি নিহত এবং সাত হাজারের বেশি আহত হয়েছে।
গত জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এক ঐতিহাসিক মতামতে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ‘ইসরায়েলি’ দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং সব বসতি সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানায়।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন