সোমবার, ২০ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম

বিশ্লেষণ

যুদ্ধবিরতি কেন বারবার ভঙ্গ করছে ইসরায়েল 

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম

ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে শিশু। ছবি- সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে শিশু। ছবি- সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত গাজা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে একদিকে যেমন আশাবাদ তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে তেমনি ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে নতুন করে উদ্বেগও দেখা দিয়েছে। পরিকল্পনাটিতে গাজার পুনর্গঠন, নিরস্ত্রীকরণ ও আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সমর্থকদের দাবি, এই উদ্যোগ যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাকে স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে। তবে সমালোচকদের মতে, পরিকল্পনাটি ‘উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া শান্তি’র একটি সংস্করণ- যেখানে মূল গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা ও অবকাঠামোয়, কিন্তু ন্যায়বিচার ও রাজনৈতিক স্বীকৃতির প্রশ্ন উপেক্ষিত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার প্রস্তাবিত প্রশাসনিক কাঠামো কসোভোর যুদ্ধ-পরবর্তী ব্যবস্থার সঙ্গে মিল রাখা হয়েছে। ১৯৯৯ সালে যুদ্ধের পর কসোভোতে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে সীমিত স্বায়ত্তশাসন চালু করা হয়েছিল- যা যুদ্ধ থামাতে সাহায্য করেছিল, কিন্তু রাজনৈতিক সমাধান অনির্দিষ্ট রেখে দেয়। দুই দশক পরও কসোভো বিশ্বের অনেক দেশের কাছে পূর্ণ স্বীকৃতি পায়নি।

গাজাতেও একই ধরনের ঝুঁকি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। পরিকল্পনার আওতায় ‘তত্ত্বাবধানে স্থানীয় শাসন’ ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা টহলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যা কার্যত সীমিত সার্বভৌমত্বের ইঙ্গিত দেয়।

বিশ্লেষকরা জানান, ‘ন্যায়বিচার ছাড়া যুদ্ধবিরতি, অথবা স্বীকৃতি ছাড়া পুনর্গঠন- গাজাকে মুক্ত ভূখণ্ড নয়, বরং নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে পরিণত করতে পারে।’

ইতিহাসবিদদের মতে, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা ও রুয়ান্ডার অভিজ্ঞতা থেকে স্পষ্ট- যুদ্ধ থামলেও, যদি ন্যায়বিচার ও রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে শান্তি দীর্ঘমেয়াদে টেকে না।

বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় ১৯৯৫ সালের ডেটন চুক্তি যুদ্ধ বন্ধ করেছিল, কিন্তু জাতিগত বিভাজনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিল। ফলাফল- এক স্থবির রাষ্ট্রব্যবস্থা। রুয়ান্ডায় আবার জাতিগত পরিচয় নিষিদ্ধ করে ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু সংলাপের অভাবে তা ‘নীরব ঐক্য’তে পরিণত হয়।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, গাজায় একই ধরনের ‘হিমায়িত শান্তি’র ঝুঁকি তৈরি হতে পারে- যেখানে যুদ্ধ থেমে গেলেও, গভীরে জমে থাকা ক্ষোভ ও অমীমাংসিত প্রশ্নগুলো থেকে যাবে।

আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের মতে, গাজার পুনর্গঠন কেবল অর্থনৈতিক বিনিয়োগের ওপর নির্ভর করবে না; প্রয়োজন রাজনৈতিক স্বীকৃতি, মানবিক মর্যাদা ও জবাবদিহিতা।

ইউরোপীয় বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা দাতা সম্মেলন বা সামরিক টহল দিয়ে হয় না; এটি গড়ে ওঠে ন্যায়বিচার ও স্বীকৃতির ভিত্তিতে।’

বিশ্লেষকদের মতে, চুক্তির মূল মূল্যায়ন হবে মাঠে- মানুষের জীবনে পরিবর্তন আসে কি না। চুক্তি নয়, বরং চুক্তির পর যা ঘটে, সেটিই এক জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে।’

গাজার জন্য এখন প্রশ্ন একটাই: এই শান্তি পরিকল্পনা কি পুনর্গঠনের সূচনা হবে, নাকি আরেকটি অনিশ্চয়তার সূচনা?

Link copied!