পটুয়াখালীর গলাচিপায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে সামসুন্নাহার (৫৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তবে তার মৃত্যু চিকিৎসা অবহেলায় হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. আতাউর রহমান জানান, গত ১৮ অক্টোবর পটুয়াখালীর রতনদী তালতলী ইউনিয়নের গুরিন্দা গ্রামের আজাহার মিয়ার স্ত্রী সামসুন্নাহার জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হলে তাকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।
তিনি আরও জানান, ‘সোমবার সকালে রোগীর অবস্থার অবনতি হলে আমরা তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিই। কিন্তু রওনা হওয়ার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।’
তবে মৃত রোগীর স্বজন ও সহ-রোগীরা চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা মোছা. আসমিন বেগম বলেন, ‘‘রাতে সামসুন্নাহার খুব অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা ডাক্তার-নার্স ডাকতে যায়, কিন্তু কেউ আসেননি। সকালে এসে বলে ‘পটুয়াখালী নিয়ে যান’, তখনই তার মৃত্যু হয়।’’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘রোগীরা নিয়মিত অবহেলার শিকার হচ্ছেন। রাতে ডিউটিতে থাকা নার্সরা ডাকার পরেও সাড়া দেয় না, উল্টো খারাপ ব্যবহার করে।’
একই ওয়ার্ডে ভর্তি ডেঙ্গু রোগী ফেরদৌস হোসেন বলেন, ‘রাতে ওই নারী ছটফট করছিলেন, কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেননি। ডেঙ্গু রোগীদের মশারি দেওয়া হয় না, ফ্লোরে শুতে হয়।’
রোগী মহিউদ্দিন বলেন, ‘রাতে সামসুন্নাহারের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে চিকিৎসা পায়নি। সকালে নার্সরা এসে দেখে, তখনো ছটফট করছিলেন। পরে ডাক্তার এসে ইনজেকশন দেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান।’
মৃত সামসুন্নাহারের মেয়ে আসমা জানান, ‘রাতে আমার মায়ের অবস্থা খারাপ হলে বারবার নার্সদের ডাক পাঠাই, কিন্তু তারা আসেননি। সকাল ৭টার দিকে এসে দেখে যান।’
এ বিষয়ে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মেজবাহ উদ্দিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
পটুয়াখালী জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. খালেদুজ্জামান বলেন, ‘এমন কোনো রিপোর্ট এখনো আমার কাছে আসেনি। তবে রোগীর পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে, আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন