বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ১১:১৯ এএম

ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডব, নিহত ৫৮

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২৫, ১১:১৯ এএম

ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ফিলিপাইনের একটি এলাকা। ছবি- সংগৃহীত

ঘূর্ণিঝড় কালমেগির তাণ্ডবে বিধ্বস্ত ফিলিপাইনের একটি এলাকা। ছবি- সংগৃহীত

ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় কালমেগি। এর তাণ্ডবে অন্তত ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল। এ ছাড়া তীব্র বৃষ্টি ও ভয়াবহ বন্যার কারণে বহু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিপর্যয় থেকে বাঁচতে কয়েক লাখ মানুষকে আগে থেকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ফিলিপাইনের সরকারি সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরের দিকে আঘাত হানা এই টাইফুন বুধবার পর্যন্ত চলে। মধ্যাঞ্চলীয় সেবু দ্বীপের সব শহরই প্লাবিত হয়েছে, যেখানে কর্দমাক্ত বন্যার পানিতে গাড়ি, ট্রাক এবং বড় আকারের কনটেইনার ভেসে গেছে।

সেবুর বেসামরিক প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপপ্রশাসক রাফায়েলিতো আলেজান্দ্রো জানান, শুধু সেবুতে ২১ জনের প্রাণহানি নিশ্চিত হয়েছে। তিনি আরও জানান, টাইফুনের প্রভাবে মৃত্যুর সংখ্যা এখন ৫৮ জনে পৌঁছেছে, যাদের বেশির ভাগই পানিতে ডুবে মারা গেছেন।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ চারম্যান ভারিলা জানান, কালমেগির আঘাতের আগে ২৪ ঘণ্টায় সেবু সিটির আশপাশে ১৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ওই এলাকার মাসিক গড় ১৩১ মিলিমিটারকে ছাড়িয়ে গেছে।

প্রাদেশিক গভর্নর পামেলা বারিকুয়াত্রো বলেন, ‘পানি হলো প্রকৃত বিপদের উৎস। বাতাসের তীব্রতা কম হলেও বন্যার পানি ভয়াবহ ক্ষতি করেছে।’

স্থানীয় দুর্যোগ কর্মকর্তা এথেল মিনোজা জানান, সেবু সিটিতে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং উদ্ধারকর্মীরা এখনো পানিবন্দি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। লেইতে প্রদেশে এক বৃদ্ধ ও বোহলে এলাকার এক ব্যক্তি ঝড়ের কারণে প্রাণ হারিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ডন ডেল রোসারিও বলেন, ‘আমি ২৮ বছর ধরে এখানে থাকি। আজকের ঝড়ের চেয়ে ভয়াবহ কিছু দেখিনি। পানি খুব দ্রুত বাড়ছিল এবং মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছিল না।’

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে ঘূর্ণিঝড় ও টাইফুন ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। উষ্ণ মহাসাগর এবং আর্দ্র বায়ুমণ্ডল টাইফুনকে দ্রুত তীব্র করে তুলছে, যার ফলে ভারি বৃষ্টিপাতও ঘনঘন ঘটছে।

ফিলিপাইনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা আলেজান্দ্রো জানান, ঝড়ের সম্ভাব্য পথ অনুযায়ী প্রায় ৪ লাখ মানুষকে আগাম নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তা করতে গিয়ে একটি উড়োজাহাজ উত্তর মিন্দানাও দ্বীপে বিধ্বস্ত হয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এ উড়োজাহাজে কেউ জীবিত আছে কি না, তা এখনো জানা যায়নি।

ফিলিপাইনের আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, টাইফুন কালমেগি বর্তমানে ভিসায়ান দ্বীপপুঞ্জ অতিক্রম করছে। সেখানে ঘণ্টায় বাতাসের গতি ১৩০ কিলোমিটার এবং দমকা হাওয়ায় ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে। এতে অনেক এলাকায় গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়েছে।

ফিলিপাইনে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ২০টি ঝড় ও টাইফুন আঘাত হানে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দেশটি ইতোমধ্যেই এই বছরের বার্ষিক গড় সংখ্যায় পৌঁছে গেছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৩–৫টি ঝড় আসার আশঙ্কা রয়েছে।

সম্প্রতি, সেপ্টেম্বরে ফিলিপাইন দুটি শক্তিশালী ঝড়ে আক্রান্ত হয়েছিল, যার একটি সুপার টাইফুন রাগাসা। ওই ঝড়ে প্রতিবেশী তাইওয়ানেও আঘাত হয়েছে এবং অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়। ফিলিপাইনে পুনর্বাসন ও উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসন প্রতিনিয়ত বন্যার পানিবন্দি মানুষের জন্য সতর্কতা ও সহায়তা প্রদান করছে।

Link copied!