বুলগেরিয়ার সরকার গঠনের এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যেই ব্যাপক দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের চাপে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রোসেন ঝেলিয়াজকভ।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, সরকার আজই পদত্যাগ করছে। সব বয়স, ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠীর মানুষ এই দাবি তুলেছে—এটাই জনগণের শক্তি, এটাকে সম্মান করতে হবে।
সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটের ঠিক আগেই এ সিদ্ধান্ত আসে। বিরোধীদলের আনা ওই প্রস্তাবকে সামনে রেখে রাজধানী সোফিয়াসহ দেশজুড়ে বিক্ষোভ তীব্র হয়। শুধু বুধবারই রাজধানীর পার্লামেন্ট ভবনের সামনে দশ হাজারের বেশি মানুষ জড়ো হয়ে ‘পদত্যাগ’ স্লোগান দেন।
প্রতিবাদকারীরা অভিযোগ করেন, সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৬ সালের খসড়া বাজেট দুর্নীতিকে আড়াল করার কৌশল। জনরোষের মুখে গত সপ্তাহে সরকার বাজেটটি প্রত্যাহার করলেও ক্ষোভ কমেনি।
২৪ বছর বয়সী দোকানকর্মী গেরগানা গেলকোভা বলেন, দুর্নীতি এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে আর সহ্য করা যায় না। আমার বেশিরভাগ বন্ধুই দেশ ছেড়ে গেছে, ফিরতেও চায় না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ বুলগেরিয়া আগামী ১ জানুয়ারি ইউরোজোনে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকার পতনের পরও এই প্রক্রিয়া থামবে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রাষ্ট্রপতির অবস্থান ও আগাম নির্বাচনের ইঙ্গিত
গত সপ্তাহেই দেশটির প্রেসিডেন্ট রুমেন রাদেভ প্রকাশ্যে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীদের সমর্থন দেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের পদত্যাগই একমাত্র সমাধান। এর ফলে দেশটিতে আবারও আগাম নির্বাচনের পথ খুলে যেতে পারে।
বুলগেরিয়া গত কয়েক বছরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গেছে। ২০২০ সালের বড় বিক্ষোভের পর থেকে দেশটিতে সাতবার আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুর্নীতির অভিযোগে একাধিকবার আলোচনায় থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বয়কো বরিসভের দল জিইআরবি গত বছরের নির্বাচনে শীর্ষে থাকায় বর্তমান জোট সরকার গঠিত হয়।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান


