শুক্রবার, ০৯ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম

‘একচেটিয়া দাদাগিরির’ বিরুদ্ধে একসঙ্গে পুতিন-শি

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ৮, ২০২৫, ১০:৪৮ পিএম

‘একচেটিয়া দাদাগিরির’ বিরুদ্ধে একসঙ্গে পুতিন-শি

চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি - সংগৃহীত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তিতে মস্কো যান একাধিক রাষ্ট্রনেতা, তবে সবচেয়ে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। 

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আমন্ত্রণে রেড স্কোয়ারের বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে শি যেভাবে কূটনৈতিক বার্তা ছুড়ে দেন, তাতে যেন স্পষ্ট হয়ে ওঠে এক নতুন শক্তির সমীকরণ।

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে ‘গভীর আস্থা ও বিশ্বাসের’ বলে উল্লেখ করে শি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একচেটিয়া দাদাগিরি ও আধিপত্য বিস্তারের যে প্রবণতা চলছে, তার বিরুদ্ধে চীন রাশিয়ার পাশে থাকবে। দুই দেশ মিলে বিশ্বব্যবস্থায় ভারসাম্য আনতে চাই।’

একটি গণমাধ্যমকে মস্কো থেকে জানানো প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট শি তাঁর চার দিনের সফরে এসে পুতিনকে ‘প্রিয় বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইতিহাসকে সঠিকভাবে তুলে ধরার বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন। 

শি’র ভাষায়, ‘বিশ্বযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, জাতিসংঘের মর্যাদা আর উন্নয়নশীল দেশগুলোর অধিকার রক্ষায় আমরা একসঙ্গে থাকব।’

এই সফরের সময়ই আলোচনায় এসেছে বহুল প্রতীক্ষিত ‘পাওয়ার অব সাইবেরিয়া ২’ প্রকল্প। রাশিয়া থেকে চীনে গ্যাস সরবরাহের এই প্রকল্প বহুদিন ধরেই ঝুলে আছে ব্যয় ও রুট সংক্রান্ত মতবিরোধে। 

তবে এবার মনে করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে এই চুক্তি নিয়ে দুপক্ষ একটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে।

প্রেসিডেন্ট পুতিনও বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে শি’কে পাশে পেয়ে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐতিহাসিক বিজয় কোনো দেশ একা অর্জন করেনি।

তিনি যোগ করেন, ‘চীন ও রাশিয়া একসঙ্গে ইতিহাস রক্ষা করবে, আর আধুনিক যুগের নতুন নাৎসিবাদ ও সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও লড়বে।’

উল্লেখ্য, পুতিন শুরু থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধকে একটি ‘নাৎসিবাদবিরোধী যুদ্ধ’ হিসেবে উপস্থাপন করে আসছেন, যেটিকে ইউক্রেন ও তার মিত্ররা ‘অপপ্রচার’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

তবে চীনের এই সফরের পেছনে আরও একটি ভূরাজনৈতিক অস্বস্তি লুকিয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে গোপন কূটনৈতিক সমঝোতায় আগ্রহী। 

এই সম্ভাব্য রুশ-মার্কিন পুনর্মিলনকে ঘিরে বেইজিংয়ে দুশ্চিন্তা ছড়িয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

এদিকে বিজয় দিবস ঘিরে মস্কোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল কঠোর। ইউক্রেন আগেই আহ্বান জানিয়েছিল, কোনো দেশ যেন তাদের সেনাবাহিনী এই আয়োজনে না পাঠায়। তবু চীনা সৈন্যদের লাল স্কয়ারে দেখা যাবে - এই বার্তায় ইউক্রেনের ক্ষোভ স্পষ্ট।

শি জিনপিং ইতোমধ্যে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন সংঘাত জিইয়ে রাখার জন্য। 

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি আগেও চীনা নেতাকে অনুরোধ করেছিলেন, যেন তিনি পুতিনকে যুদ্ধ থামাতে রাজি করান।

তবে বাস্তবতা বলছে, চীন এখন রাশিয়ার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সহায়। রুশ তেল ও গ্যাসের প্রধান ক্রেতা হয়ে চীন মস্কোকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফাঁদ থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিচ্ছে। আর সেই সহায়তার বদলে রাশিয়াও চীনের সঙ্গে ‘সীমাহীন কৌশলগত সম্পর্ক’ গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এই বিজয় দিবসের মঞ্চে পুতিন-শি’র একসঙ্গে উপস্থিতি শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং বিশ্বের কূটনৈতিক মানচিত্রে এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের প্রদর্শন - যার প্রভাব পড়তে পারে বহু দূর অবধি।

Link copied!