ঢাকা সোমবার, ০৪ আগস্ট, ২০২৫

নামাজরত মাকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার কিশোরী

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

শনিবারের দুপুরটা ছিল অন্য যেকোনো দিনের মতোই। নিজের সাদামাটা বাড়িতে ৪৯ বছর বয়সি ইয়াতি দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন নামাজে। বাইরে রোদ ঝলমল, ভেতরে সেজদার নিস্তব্ধতা। কারও কল্পনাতেও ছিল না, এই নীরবতার বুক চিরে নেমে আসবে ভয়াবহ এক ট্র্যাজেডি।

জোহরের নামাজে যখন ইয়াতি মগ্ন, তখনই তার ১৮ বছরের মেয়ে এনআর হাতে তুলে নিল একটি হামানদিস্তা ও ছুরি। নিঃশব্দে হামলে পড়ে মায়ের ওপর। ঘটনাটি  ইন্দোনেশিয়ার বেংকুলুর। প্রতিবেশীরা বলছেন, ইয়াতির মাথা ও শরীরের ওপর বারবার আঘাত করা হয়। তিনি আর উঠতে পারেননি। সেখানেই নিথর হয়ে পড়েন।

রক্তের ছোপ শুকানোর আগেই ঘটনার খবর ছড়িয়ে যায় আশপাশে। কিন্তু সবচেয়ে বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে এরপর। মা’কে হত্যা করার পর এনআর হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে হাজির হয় পাশের বাড়িতে। দরজায় দাঁড়িয়ে সরল স্বরে স্বীকার করে, ‘আমি আমার মাকে মেরে ফেলেছি’।

সেদিন উপস্থিত এক প্রতিবেশী আজও যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘ওর মুখে কোনো আতঙ্ক বা লজ্জা দেখিনি। আমরা সবাই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যাই তাদের ঘরে।’

স্থানীয় গণমাধ্যম ‘সিলামপারি টিভি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে যারা পৌঁছান, তারা দেখেন নিস্তব্ধ ঘরের মেঝেতে পড়ে আছেন ইয়াতি। কোনো সাড়াশব্দ নেই। তখন আর দেরি না করে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

গাদিং সেম্পাকা থানার অপরাধ তদন্ত ইউনিটের প্রধান পরিদর্শক পুত্রা আগুং জানান, এই কিশোরী কিছুদিন আগেই মানসিক হাসপাতালে ভর্তি ছিল। মাত্র চার দিন আগে অর্থাৎ ৩০ জুলাই বেংকুলুর সুপ্রাপতো বিশেষ মানসিক হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছিল সে।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে, হত্যাকাণ্ডের পেছনে মানসিক ভারসাম্যহীনতা বড় কারণ।

এনআরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে বেংকুলু পুলিশ সদরদপ্তরে। ছোট দুই ভাই-বোনকে সাময়িকভাবে প্রতিবেশীদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।

ইয়াতির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ভায়াঙ্গকারা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষ হলে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।