সুদানের দারফুরে এল-ফাশর ঘাঁটি থেকে সেনাবাহিনী পিছু হটার পরও ‘হত্যাযজ্ঞ’ চালানোর অভিযোগ উঠেছে দেশটির আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) বিরুদ্ধে । সেনাবাহিনী ও জাতিসংঘ বলছে, মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় হাসপাতালে থাকা রোগীসহ দুই হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষ হত্যা করেছে তারা।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিন্দার ঝড় বইছে বিশ্বজুড়ে। আরএসএফের এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সৌদি আরব, মিশর, কাতার, তুরস্ক, জর্ডান, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বহু দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা।
২০২৩ সাল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধে ইতোমধ্যে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে।
সর্বশেষ ১৭ মাস অবরোধের পর দারফুরে থাকা সেনাবাহিনীর শক্ত ঘাঁটি এল-ফাশর দখলে নেয় সুদানের আধাসামরিক বাহিনী- আরএসএফ। এরপর সেখানে থাকা একটি হাসপাতালকেও টার্গেট করা হয়। খুব ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয় হাসপাতালটির ৪৬০ রোগী ও কর্মীকে। প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার বরাতে এমন তথ্য তুলে ধরেছে জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সেনাবাহিনীর তথ্য বলছে-২৬ ও ২৭ অক্টোবর মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় শহরটিতে সবমিলিয়ে দুই হাজার বেসামরিক নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে আরএসএফ। এ তালিকায় ছিলো অনেক স্বেচ্ছাসেবকও।
আইএফআরসি মুখপাত্র টমাসো ডেলা লঙ্গা বলেন, ‘আমরা হতবাক, বিধ্বস্ত। এমন নৃশংস ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা নেই। সংঘাত শুরুর পর থেকে আমরা ইতিমধ্যে আমাদের ২১ সহকর্মীকে হারিয়েছি।’
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে, গত রবিবার থেকে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ এল-ফাশর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। অনেকেই আশ্রয়হীন অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছেন। পালানোর সময়ও বহু বেসামরিক নাগরিক হামলা ও যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
আইন বিশেষজ্ঞ মাথিল্ডে ভু বলেন, ‘এল-ফাশরের বর্তমান পরিস্থিতি একেবারে অন্ধকারে ঢেকে আছে। শহরের ভেতরে আটকে থাকা মানুষগুলোর জন্য আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। নতুন কোনো তথ্য না আসা আরও চিন্তার বিষয়।’



