ঢাকা সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫

২০২০ সালে প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষ

সম্পর্ক ‘ঠিক’ করতে চীন সফরে জয়শঙ্কর

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৫, ০৬:০৬ পিএম
চীনের উপ-রাষ্ট্রপতি হান ঝেং ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ছবি- সংগৃহীত

চীনের উপ-রাষ্ট্রপতি হান ঝেং সোমবার (১৩ জুলাই) বেইজিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, চীন ও ভারতের উচিত বাস্তবভিত্তিক সহযোগিতা অব্যাহতভাবে এগিয়ে নেওয়া।

চীনা রাষ্ট্রসংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, হান ঝেং উভয় দেশের প্রতি একে অপরের উদ্বেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানান এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের স্থিতিশীল ও গঠনমূলক অগ্রগতিকে উৎসাহিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

জয়শঙ্কর বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হচ্ছে। ২০২০ সালে প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষের পর এই প্রথম তিনি চীন সফর করছেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কের ধারাবাহিক স্বাভাবিকীকরণ পারস্পরিকভাবে উপকারী ফল বয়ে আনতে পারে।’

গত অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে উন্নতির ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে।

সিনহুয়ার খবরে আরও বলা হয়, হান ঝেং ‘ড্রাগন-হাতির ট্যাঙ্গো’র ধারণার উপর জোর দেন। চীন ও ভারতের মধ্যে একটি সুরেলা সম্পর্ক গড়ে তোলার যে রূপক, যা দুই দেশের স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তিনি বলেন, প্রধান উন্নয়নশীল দেশ এবং গ্লোবাল সাউথের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে এই দুই দেশের সম্পর্ক বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

২০২০ সালে গালওয়ান উপত্যকায় ৩ হাজার ৪৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বিরোধ কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর এই বৈঠক দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনের সাম্প্রতিকতম পদক্ষেপ। চলতি সফরটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন গত বছর থেকে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে এবং ভারতীয় শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ধীরে ধীরে চীন সফর শুরু করেছেন।

জুন মাসে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং কিংডাওতে অনুষ্ঠিত সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নিতে চীন সফর করেন। ধারণা করা হচ্ছে, কর্মকর্তারা এই সফরগুলোর মাধ্যমে আসন্ন এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদির সম্ভাব্য চীন সফরের ভিত্তি তৈরি করছেন।

ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়েছে, জয়শঙ্কর সোমবার তার চীনা প্রতিপক্ষ ওয়াং ইয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে, এবং এরপর তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিতব্য এসসিওর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলে অংশ নিতে রওনা হবেন।

এদিকে প্রতিবেদনের এক ভিন্ন সূত্র জানায়, এপ্রিল মাসে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের মধ্যে এক মারাত্মক অচলাবস্থার সময় পাকিস্তান ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করতে চীনা জেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে। ওই সংঘর্ষে ভারতের হামলায় কয়েক ডজন পাকিস্তানি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। চারদিন স্থায়ী সেই সংঘাত অবশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় শান্তিচুক্তির মাধ্যমে শেষ হয়।