আলাহাবাদ হাইকোর্ট সম্প্রতি এক রায়ে বলেছেন, একজন মুসলিম পুরুষ একাধিক বিবাহ করতে পারেন, যদি তিনি সব স্ত্রীকে সমানভাবে মর্যাদা ও অধিকার প্রদান করেন।
আদালত বলেন, কোরআনে বিশেষ কারণ দেখিয়ে একাধিক বিবাহের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে অনেক সময় এটি স্বার্থপরতার জন্য ভুলভাবে ব্যবহার করা হয়।
এই মন্তব্য করেন বিচারপতি অরুণ কুমার সিংহ দেসওয়াল, যখন তিনি মোরাদাবাদ আদালতের জারি করা চার্জশিট, বিচার গ্রহণ এবং সমন বাতিলের জন্য এক আবেদনের শুনানি করছিলেন। মামলার আসামি ফুরকান নামের এক ব্যক্তি।
ঘটনার সূত্রপাত ২০২০ সালে, যখন এক নারী অভিযোগ করেন যে, ফুরকান তাকে বিয়ে করেছেন কিন্তু আগেই আরেকটি বিয়ে করার কথা গোপন রেখেছিলেন। ওই নারী আরও অভিযোগ করেন, বিয়ের সময় তাকে ধর্ষণও করা হয়।
এরপর মোরাদাবাদ থানায় মামলা রুজু হয় এবং তিনজনের নামে সমন জারি হয়- ফুরকান ও আরও দুজন।
ফুরকানের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, ওই নারী স্বীকার করেছেন যে, তিনি সম্পর্কের পর ফুরকানকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, যেহেতু দ্বিতীয় বিয়েটি ইসলাম অনুযায়ী বৈধ, তাই ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা (বিবাহিত অবস্থায় পুনরায় বিয়ে) এখানে প্রযোজ্য নয়।
বিচারপতি দেসওয়াল বলেন, মুসলিম পুরুষদের কোরআনের আলোকে চারটি বিয়ের অনুমতি রয়েছে, তবে প্রতিটি ক্ষেত্রে স্ত্রীর প্রতি ন্যায়বিচার ও সমতা বজায় রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কেন কোরআনে বহু বিবাহের অনুমতি রয়েছে, তার একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও আছে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, বিবাহ ও তালাক সংক্রান্ত সব বিষয় ১৯৩৭ সালের শরিয়ত আইনের অধীনে নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।
আদালতের ১৮ পৃষ্ঠার রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, যেহেতু ফুরকানের উভয় স্ত্রী মুসলিম, তাই তার দ্বিতীয় বিয়েটি শরিয়ত অনুযায়ী বৈধ।
এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ মে।