বরিশালের উজিরপুরে মাদকাসক্ত স্বামী যৌতুকের টাকা না পেয়ে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে নিজের নবজাতক সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ করেছেন তারই স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩০)।
শুধু তাই নয়, রোজিনা বেগম প্রতিবাদ করলে তাকে বেদম মারধর করে বাহিরে ফেলে রাখেন স্বামী মনজুর আলম সরদার (৪৪)। পরে স্থানীয়রা ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
মনজুর আলম উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের জয়শ্রী গ্রামের হাতেম আলী সরদারের ছেলে। আর রোজিনা বেগম একই ইউনিয়নের হস্তিশুন্ড গ্রামের হাকিম মৃধার মেয়ে।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানান, রোজিনা বেগমের সঙ্গে মনজুর আলম সরদারের সামাজিকভাবে বিবাহ হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই মনজুর আলম মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন এবং শ্বশুরবাড়ি থেকে দফায় দফায় যৌতুকের টাকা আদায় করেন।
এদিকে গত তিন মাস পূর্বে গৌরনদীর কোনো এক ক্লিনিকে সিজারের মাধ্যমে একটি পুত্র সন্তান জন্ম হয় স্ত্রী রজিনা বেগমের। যৌতুক লোভী এই পাষণ্ড স্বামী ছেলেটিকে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগী ওই নারী।
সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা জন্মানোর পরে তার স্বামী তাকে জানান তার একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছেন এবং খুবই অসুস্থ। তাই তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং সেখানে সে মারা গেছে।
লাশ দেখতে চাইলে তিনি (মনজুর আলম) বলেন- ‘সে লাশ আর আনা হয়নি, ওখানে রেখে এসেছি।’ বিক্রির বিষয়টি পরে জানতে পেরে প্রতিবাদ করলে ৩০ জুন সোমবার সন্ধ্যায় তার স্বামী বাবার বাড়ির সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
এতে অপরগতা প্রকাশ করলে তাকে বেদম মারধর করে অজ্ঞান করে ফেলে এবং স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ বাচ্চাদের নিজের কাছে আটকে রেখে স্ত্রীকে ঘড়ের বাইরে ফেলে রাখে।
মারধরের বিষয়ে প্রতিবেশীরা রোজিনার আত্মীয়-স্বজনদেরকে খবর দেন। পরে তারা এসে উদ্ধার করে হসপাতালে ভর্তি করান।
যৌতুকের দাবিতে মারধরে বিষয়ে মনজুর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি মারধর করিনি, উল্টো আমাকে মারধর করেছে।’
বাচ্চা বিক্রির বিষয় প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘স্ত্রীকে হসপাতালে ভর্তির কাগজে কোনো স্বাক্ষর করিনি, তাই এ বিষয়ে আমি দায়ী নই।
উজিরপুরের মডেল থানার ওসি মো. আব্দুস সালাম জানান, ‘এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’