ঢাকা শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫

‘পুশ-ইন’ নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের অবস্থান কী

ডয়চে ভেলে
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম
বাগেরহাটের সুন্দরবনের মান্দারবাড়িয়া চরে জোরপূর্বক তিন জন ভারতীয় নাগরিকসহ ৭৮ জনকে জাহাজে করে রেখে গেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ছবি- ইউএনবি

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিজিবি বলছে, গত ৭ মে সকাল পর্যন্ত ভারত কয়েক দফায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ২৬২ জনকে ‘পুশ-ইন’ করেছে। বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়ে  ৯ মে দিল্লিকে একটি চিঠি দিয়েছে ঢাকা।

কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে এখনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় বুধবার (১৪ মে) সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত থেকে দুই দফায় ৬০ জনকে ‘পুশ-ইন’ করা হয়েছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছে বিজিবি।

এর আগে খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার ও কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে কয়েক দফায় ২০২ জনকে ‘পুশ-ইন’ করে ভারত। তাদের মধ্যে ১৬৩ জন বাংলাদেশি নাগরিককে পুলিশ ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে তারা যে বাংলাদেশি নাগরিক, তা নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিজিবি।

স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

১৯ জনকে রোহিঙ্গা হিসেবে চিহ্নিত করে কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইউএনএইচসিআর’র কাছে পাঠানো হয়েছে। বাকি ২০ জনের নাগরিকত্বের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া এখনো চলছে বলে বিজিবি জানিয়েছে।

এ বিষয়ে কলকাতা ও নয়াদিল্লিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ডিডাব্লিউ। কিন্তু তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

তবে ১০ মে শনিবার আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে মাটিয়া ট্রানজিট ক্যাম্পের অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের পুশ-ব্যাক করা হয়েছে৷’

খাগড়াছড়ি, মৌলভীবাজার ও কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে কয়েক দফায় ২০২ জনকে পুশ-ইন করে ভারত— সংগৃহীত

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে ‘পুশ-ইন’ বলে আখ্যায়িত করে। আর ভারতে বলা হয় ‘পুশ-ব্যাক’।

গত ১০ মে ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘হিমন্ত বলেছেন, মাটিয়ার ক্যাম্পে থাকা মানুষরা প্রায় সবাই চলে গেছেন। যাদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, তারা বাদ দিয়ে আর কেউ নেই। এটা ভারত সরকারের অপারেশন ছিল। আসাম তার স্টেকহোল্ডার ছিল। দেশের চিহ্নিত বিদেশিদের সঙ্গে আসামের চিহ্নিত বিদেশিদের পুশ-ব্যাক করা হয়েছে।’

আসামের মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বশর্মা বলেন, ‘রোহিঙ্গারাও চলে গেছে। মাটিয়ার ক্যাম্পে ৩০-৪০ জন খালি থেকে গেছেন। তার দাবি, ‘আমাদের তরফ থেকে প্রায় প্রতিদিনই পুশ-ব্যাক হয়। জিরো লাইনে আমরা ওদের দেখতে পেলেই বিডিআর-কে বলি, ওরা সীমান্ত পেরোতে চাইছে। তাই ওদের ধর। এ ব্যবস্থা এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিচ্ছে।’

আসামের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন আর আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে যেতে চাইছি না। আগে ওদের গ্রেপ্তার করা হতো, ভারতীয় আইনি ব্যবস্থায় আনা হতো। এখনো হয়তো অনেকে জেলে আছে, তাদের আদালতে পেশ করা হচ্ছে৷ এখন আমরা আর তাদের ভারতে ঢুকতেই দিচ্ছি না। তার আগেই তাদের পুশ-ব্যাক করে দিচ্ছি। আগে প্রতিবছর চার থেকে পাঁচ হাজার মানুষ ঢুকে পড়ত। এখন পুশ ব্যাকের ফলে তাদের সংখ্যা অনেক কমে গেছে৷’

ভারতকে বাংলাদেশের চিঠি

ভারতকে পাঠানো চিঠিতে অবিলম্বে ‘পুশ-ইন’ বন্ধের অনুরোধ জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘পুশ-ইনের’ পদক্ষেপগুলো ১৯৭৫ সালের সীমান্ত কর্তৃপক্ষের জন্য যৌথ ভারত-বাংলাদেশ নির্দেশিকা, সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) ২০১১ এবং বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের আলোচনায় দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মত সিদ্ধান্তের পরিপন্থি৷’

এতে আরও বলা হয়, ‘কোনো ব্যক্তির বাংলাদেশি নাগরিকত্বের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বিদ্যমান প্রক্রিয়া মেনে বাংলাদেশ তাদের ফেরত নেবে। এর ব্যত্যয় হলে দুই দেশের বোঝাপড়ার মধ্যে বিঘ্ন সৃষ্টি করবে। একইভাবে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশের পরিবর্তে তাদের আদি নিবাস মিয়ানমারেই ভারতের ফেরত পাঠানো উচিত। কোনোভাবে ভারতীয় নাগরিকদের জোর করে বাংলাদেশে পুশ-ইন করাটা উচিত হবে না। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে এ ধরনের পুশ-ইন অগ্রহণযোগ্য এবং তা পরিহার করা উচিত।’

‘পুশ-ইন’ হওয়া ব্যক্তিদের কথা

পরিবারের কাছে হস্তান্তর হওয়াদের একজন বাদশা মোল্লা। তার বাড়ি খুলনার তেরখাদা উপজেলায়। তিনি বলেন, ‘আমি চার মাস আগে বেনাপোল দিয়ে দালালের মাধ্যমে ওপারে (ভারত) যাই। সীমান্তের ওপারে গিয়ে সেখান থেকে গুজরাটে যেতে চার-পাঁচ দিন লাগে। আমার কোনো পাসপোর্ট ভিসা ছিল না। দালালকে চার হাজার টাকা দিয়েছিলাম। আমাদের এখান থেকে আরও কেউ কেউ গিয়েছে। গুজরাটে আমার এলাকার আরও পরিচিত লোক ছিল। সেখানে গিয়ে ভবন নির্মাণের কাজ করি। আমাদের সেখানে থাকতে কোনো টাকা লাগত না। মাসে ১২-১৩ হাজার রুপি পেতাম। চন্ডাল এলাকায় সরকারি জায়গায় থাকতাম।’ 

তিনি বলেন, ‘আমাদের বেশ কয়েকজনকে কয়েকদিন আগে পুলিশ ধরে। তারপর ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে দেয়। তারা আমাদের ইন্ডিয়ান কোস্ট গার্ডের কাছে দেয়। তারা আমাদের জাহাজে করে বাংলাদেশের সুন্দরবনে ফেলে রেখে যায়।’

বাদশা মোল্লা অভিযোগ করেন, আটকের পর তাদের মারধর করা হয়েছে। লাঠি দিয়ে পেটানো হয়েছে। খাবারও অল্প দেওয়া হয়েছে।

আরেকজন হলেন সামির সরদার। তার বাড়ি নড়াইলের কালিয়ায়। তার আত্মীয় মন্টু মোল্লার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘চার বছর আগে সে তার এক আত্মীয়কে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারতে যায়। তবে তাদের কারোরই পাসপোর্ট-ভিসা ছিল না। তারা বেনাপোল দিয়ে দালাল ধরে যায়। ওই আত্মীয় ভারতে মারা গেলে সামির আর ফিরে আসেনি। গুজরাটে ভবনে টাইলসের কাজ করত। ওখানে আরও অনেক বাংলদেশি এই কাজ করে।’

বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী— সংগৃহীত

তাকে এবার আটকের পর মারধর করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। সবাইকেই মারধর করা হয়। মন্টু মোল্লা বলেন, ‘মারধরে সমির বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে।’

‘এটা পরিকল্পিত পুশ-ইন’

বিজিবি জানিয়েছে, যথাযথ প্রক্রিয়ায় পুশ-ইন না করায় বিএসএফের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে মৌখিক ও লিখিতভাবে প্রতিবাদলিপি পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া পুশ-ইন রোধে সীমান্তে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বাড়ানো হয়েছে।

বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘এটা পরিকল্পিত পুশ-ইন। সীমান্তের দুর্গম এলাকা, যেখানে সাধারণভাবে নজরদারি করা যায় না, সেসব এলাকা থেকে পুশ-ইন করা হচ্ছে। কিছু রোহিঙ্গাকে পুশ-ইন করা হয়েছে, যারা ভারতে ইউএনএইচসিআরের রেজিস্টার্ড। তারা যে দেশের রিফিউজি সেই দেশে পাঠাতে পারত। এটা ন্যক্কারজনক।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে যে খবর আছে তাতে আরও কমপক্ষে ৩০০ জনকে বিভিন্ন সীমান্তে জড়ো করা হয়েছে পুশইনের জন্য। আমরা ওইসব সীমান্তে টহল ও নজরদারি আরও বাড়িয়েছি।’

বিজিবির মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘প্রধানত খাগড়াছড়ি, কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়েই বেশি পুশ-ইন করা হচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশিরা যদি অবৈধভাবে ভারতে থাকেন, তাদের আমরা ডিউ প্রসিডিউর ফলো করে ফেরত নিতে রাজি আছি। কিন্তু যেভাবে পুশ-ইন করা হচ্ছে সেটা সীমান্ত আইনে করা যায় না। আর যাদের পুশ-ইন করা হচ্ছে তাদের মধ্যে যারা বাংলাদেশি তাদের অনেকে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে ছিল। তাদের কারোর সন্তানও হয়েছে সেখানে। ওই সন্তানদের ভারতের আধার কার্ড আছে।’

‘এই পুশ-ইন আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী’

বাংলাদেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আ ন ম মুনীরুজ্জামান বলেন, ‘ভারত যেভাবে পুশ-ইন করছে, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ এটার একটা আইনি প্রক্রিয়া আছে। তারা সেটা মানছে না। বাংলাদেশি যদি কেউ ভারতে অবৈধভাবে বসবাস করে থাকে, তাদের অবশ্যই আইনগতভাবে ফেরত পাঠাতে হবে। পুশ-ইন কোনো বৈধ প্রক্রিয়া নয়। এটা দুই দেশ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করবে। আর তাদের দেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদেরও তারা বাংলাদেশে পুশ-ইন করছে। এটা পুরো বেআইনি।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) এম শহীদুল হক বলেন, ‘এই পুশ-ইন আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী। তারা শুধু বাংলাদেশেই পুশ-ইন করছে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে গুজরাটেও তারা কোনো আইন মানছে না। সেখানে বাংলাদেশি বলে যাদের আটক করেছে, তাদের প্রায় সবাই ভারতীয় মুসলমান।’

তিনি বলেন, ‘দুই দেশের জলসীমায় আমরা প্রতি বছরই বাংলাদেশ ও ভারতীয় নাগরিকদের আটক হতে দেখি। এরা জেলে। তাদের ব্যাপারে দুই দেশ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু এবার তারা তাদের দেশের ভেতরে আটক করে পুশ-ইন করছে। এটা বেআইনি। কেউ যদি ওই দেশে পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া থাকে, তাদের আটক করে সেখানকার আদালতে নিয়ে ভেরিফাই করতে হবে। ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা হতে পারে, কিন্তু তারা যেটা করছে সেটা বেআইনি।’

আর অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা-বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান বলেছেন, ‘ভারত থেকে এভাবে পুশ-ইন করা হচ্ছে, সেটা সঠিক প্রক্রিয়া নয়। আমরা প্রতিটি কেস আলাদা আলাদাভাবে নিরীক্ষণ করছি। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আমাদের দেশের নাগরিক যদি কেউ হয়ে থাকেন, আর সেটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের আমরা গ্রহণ করব। তবে এটা ফরমাল চ্যানেলে হতে হবে। এভাবে পুশ-ইন করাটা সঠিক প্রক্রিয়া নয়।’

ভারতের বিশ্লেষকদের কথা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ-ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) সম্পাদক কিরীটি রায় ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘পুশ-ব্যাক নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। যদি এ ঘটনা সত্যি হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র দপ্তর এবং যে রাজ্যের সীমান্ত দিয়ে যাচ্ছে তার স্বরাষ্ট্র দপ্তর এবং পুলিশ বিষয়টা জানবে। এখন এই ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোনো তথ্য নেই। এখানকার মিডিয়াতেও কিছু প্রকাশিত হয়নি। সরকারিভাবেও কিছু সামনে আসেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এদেশ থেকে ওদেশে পাঠাতে গেলে ফরেনার্স অ্যাক্টের সেকশান ১৪ অনুযায়ী কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা থাকতে হবে। সেটা ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে যেতে হবে। সেই কোর্ট একটা রায় দেবে। তার ভিত্তিতেই তাকে ওপারে পাঠানো যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হচ্ছে তা নিয়ে কেউ কিছু জানে না বা বলছে না।’

‘হয় বাংলাদেশের মিডিয়া এটা ভুল বলছে, নয়তো এখানেও মিডিয়া কিছু জানে না বা তাদের চুপ করিয়ে রাখা হয়েছে। আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে এ নিয়ে বারবার অভিযোগ পাচ্ছি। এটা পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত দিয়েও হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। যদি এটা সত্যি হয় তাহলে এটা অবৈধ। আমাকে বাংলাদেশের বন্ধুরা এবং মিডিয়া ফোন করেছে। আমি তথ্য দিয়ে কোনো কিছুই বলতে পারছি না। আমার হাত-পা বাঁধা। যদি একজনের সঙ্গেও এ ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে সেটা বেআইনি।’