সোমবার, ২৬ মে, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম

বাংলাদেশের ভয়ে ‘চিকেন নেকে’ এস-৪০০ মোতায়েন ভারতের

বিশ্ব ডেস্ক

প্রকাশিত: মে ২৫, ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম

‘চিকেন নেকে’ রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন। ছবি- সংগৃহীত

‘চিকেন নেকে’ রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন। ছবি- সংগৃহীত

শিলিগুড়ি করিডরে ভারতের সামরিক তৎপরতা নজিরবিহীনভাবে বেড়ে গেছে। ভারতের পূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর ‘চিকেনস নেক’ করিডর ঘিরে নয়াদিল্লি যে প্রতিরক্ষা বলয় গড়ছে, তা চীন ও বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার প্রতি সরাসরি ও হিসাব কষে নেওয়া একটি জবাব।

সম্প্রতি শিলিগুড়িতে রাশিয়ার তৈরি অত্যাধুনিক এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে ভারত। দূরপাল্লার মিসাইল সিস্টেমটি ৪০০ কিলোমিটারের বেশি রেঞ্জে একাধিক আকাশ লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত ও ধ্বংস করতে সক্ষম।

পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার হাশিমারা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়েছে রাফালে ফাইটার স্কোয়াড্রন—যা মেটিওর ও স্ক্যাল্প ক্ষেপণাস্ত্রসহ আধুনিক ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সরঞ্জামে সুসজ্জিত।

এই প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির নেপথ্যে রয়েছে ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যে ক্রমবর্ধমান কৌশলগত ঘনিষ্ঠতা। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সামরিক ও অর্থনৈতিক অংশীদারত্বে স্পষ্ট অগ্রসরতা দেখিয়েছে।

শনিবার (২৪ মে) প্রকাশিত ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, লালমনিরহাটে চীন-সমর্থিত বিমানঘাঁটি স্থাপনের সম্ভাব্যতা ও ঢাকার সঙ্গে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে’ জড়িত হওয়া ভারতের কাছে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে!

ক্রুজ মিসাইল। ছবি- সংগৃহীত

এ ছাড়া বাংলাদেশের হাতে ১২টি তুর্কি বায়রাক্টার টিবি২ ড্রোন আসার পর সীমান্তবর্তী এলাকায় তাদের আইএসআর (গোয়েন্দা, নজরদারি ও পুনঃনিরীক্ষণ) মিশন ভারতের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। গত বছর এই ড্রোন ভারতের সীমান্তের ১০ কিলোমিটারের ভেতরে প্রবেশ করলে ভারত কঠোর প্রতিক্রিয়া জানায়।

এরই মধ্যেই বাংলাদেশ ৩২টি চীন-পাকিস্তান নির্মিত জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান কেনার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এগুলো এইএসএ রাডার, আধুনিক ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম এবং চীনা ক্ষেপণাস্ত্র সজ্জায় সজ্জিত, যা আঞ্চলিক এয়ার পাওয়ার ব্যালান্সে নতুন মাত্রা যোগ করছে।

এমন পরিস্থিতিতে ভারত শিলিগুড়ি করিডরজুড়ে একাধিক স্তরের বিমান প্রতিরক্ষা স্থাপন করেছে— আকাশ এমআরএডি, শোরদ (স্বল্প-পাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা), ও ভিএসএইচওআরএডি (অত্যন্ত স্বল্প-পাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা) ব্যাটারির মাধ্যমে নিচু ও মাঝারি স্তরের আকাশ হুমকিকে প্রতিহত করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ব্রহ্মোস সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল রেজিমেন্ট ও টি-৯০ ট্যাঙ্ক সমৃদ্ধ ত্রিশক্তি কর্পসকে মোতায়েন করে মাটির লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

চীনকে লক্ষ্য করে গঠিত ‘ব্রহ্মাস্ত্র কর্পস’—পর্বত স্ট্রাইক বাহিনী— নিয়ন্ত্রণ রেখা বা লাইন অব কন্ট্রোল বরাবর গভীর আক্রমণের জন্য প্রস্তুত, যার সদর দপ্তর পানাগড়ে।

গত মাসে প্রকাশিত ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের এই সংকীর্ণ ভূমি (চিকেন নেক) উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোকে ভারতের বাকি অংশের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।

একই সঙ্গে করিডোরের ঘেঁষে নেপাল, বাংলাদেশ, ভুটান ও চীনের সীমান্ত। সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত এই গুরুত্বপূর্ণ করিডোরটিকে রক্ষা করার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

ভারতীয় সেনাপ্রধানের বিবৃতি করিডোরের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের অবস্থানকে আরও জোরদার করেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘চিকেন নেক’ ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক অঞ্চল, যেখানে যেকোনো হুমকির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম এবং উত্তর-পূর্বের বাহিনীকে দ্রুত মোতায়েন করা যেতে পারে।

ভারতের প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপগুলো কেবল সম্ভাব্য হুমকির জবাব নয়, বরং একাধিক ফ্রন্টে যুদ্ধের সম্ভাবনার মুখে ভারতের পূর্ব সীমান্তে শক্তিশালী প্রতিরোধ বলয় গড়ে তোলার প্রমাণ।

শিলিগুড়ি করিডরে ভারতের প্রতিরক্ষা জোরদার কেবল আঞ্চলিক শক্তির পালাবদল নিয়ে উদ্বেগই নয়, বরং চীন ও পাকিস্তান ঘনিষ্ঠ হয়ে ঢাকার কাছাকাছি আসায় সম্ভাব্য দ্বিমুখী চাপ মোকাবিলায় পূর্ব ফ্রন্টকে শক্তিশালী করার ভারতের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিরও প্রতিফলন।

‘চিকেন নেক’কে কেন্দ্র করে নয়াদিল্লির এই তৎপরতা ভারত-চীন-বাংলাদেশ-পাকিস্তান চতুর্ভুজে উত্তেজনার বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা।

Link copied!