পঁচিশ হাজার রুপি ঋণের জন্য ভারতীয় আদিবাসী নারীর শিশুকে বন্ধক রাখা হয়। পরবর্তীতে সে সন্তানের মৃত্যু হলে গোপনে অন্য রাজ্যে মরদেহ দাফন করে মালিক। প্রাথমিক তদন্তে জন্ডিসে মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, ঘটনাটি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের তিরুপতি শহরে ঘটে। মঙ্গলবার (২০ মে) ছেলেটির মরদেহ উত্তোলন করে পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যক্তি ও পরিবার ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
আনাকাম্মা নামে ওই আদিবাসী নারী ও তার স্বামী চেঞ্চাইয়া এবং তিন সন্তান তিরুপতির এক হাঁসপালকের বাড়িতে এক বছর ধরে কাজ করছিলেন। অল্প মজুরিতে তাকে ও তার সন্তানদের দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে বাধ্য করা হতো। মজুরি বাড়ানোর অনুরোধ করলেও তা না করায় কাজ ছেড়ে দিতে চান আনাকাম্মা। পূর্বে গৃহীত ২৫ হাজার কর্জ সুদসহ ৪৫ হাজার শোধ না করায় জোরপূর্বক এক সন্তানকে বন্ধক নেন ওই মালিক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১২ এপ্রিল ছেলের সঙ্গে শেষবার কথা বলার সময় ছেলেটি অতিরিক্ত কাজ করানোর কথা আনাকাম্মাকে জানায়।
এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে আনাকাম্মা টাকা জোগাড় করতে সক্ষম হলেও ছেলেটিকে ফেরত দেয়নি ওই মালিক। প্রথমে অন্যত্র পাঠানোর পরবর্তীতে হাসপাতালে ভর্তি ও অবশেষে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলে সেই মালিক।
পুলিশের দ্বারস্থ হলে ওই হাঁসপালক ছেলেটির মৃত্যুর কথা স্বীকার করেন। গোপনে তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমে তার শ্বশুরবাড়ির কাছে মরদেহটি কবর দেওয়ার কথাও স্বীকার করে ওই হাঁসপালক।
পুলিশ জানায়, গত সোমবারই ওই হাঁসপালক, তার স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বন্ধক শ্রম পদ্ধতি (বিলোপ) আইন, শিশু শ্রম আইন, কিশোর ন্যায়বিচার আইন, এসসি/এসটি অ্যাট্রোসিটিস আইন ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ছেলেটির মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
তিরুপতির কালেক্টর ভেঙ্কটেশ্বর এই মামলাটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। হাঁসপালকের পরিবার বলছে ছেলেটি জন্ডিসে মারা গেছে। কিন্তু তাকে গোপনে কবর দেওয়া হয়েছিল এবং তার পরিবারকে জানানো হয়নি। আমরা এটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’