ঢাকা মঙ্গলবার, ০৫ আগস্ট, ২০২৫

অভিনব পন্থায় বাংলাদেশিদের ‘হত্যা’ করছে ভারত

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৫, ২০২৫, ১২:০২ এএম
সীমান্তে পাহারা দিচ্ছে ভারতের বর্ডার গার্ড বাহিনী বিএসএফ। ছবি- সংগৃহীত

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা এখন নতুন রূপ নিয়েছে। আগের মতো গুলি করে হত্যা নয়, বরং এখন বৈদ্যুতিক শক, দেশীয় অস্ত্রের আঘাত ও অ্যাসিডে পুড়িয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পরে এসব মরদেহ ফেলে দেওয়া হচ্ছে পদ্মা নদীতে।

গত ২০ জুলাই ভোরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার জহুরপুর সীমান্ত পিলার ১৬/৫-এর কাছ থেকে মোহাম্মদ লালচান (২৫) নামের এক যুবককে আটক করে বিএসএফ। পরে তাকে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। তার মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা নাচোলের নেজামপুর গ্রামে দাফন করেন।

এরপর ১ আগস্ট বিকেলে রাজশাহীর গোদাগাড়ীর ফুলতলা ঘাটে পদ্মা নদীতে সৈয়বুর নামে আরেক ব্যক্তির ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ ভেসে ওঠে। সর্বশেষ ২ আগস্ট মাসুদপুর সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে অ্যাসিডে পুড়িয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারতীয় কিছু চক্র সস্তায় গরু দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশিদের সীমান্তের কাছে ডেকে নেয়। পরে তাদের বিএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়, আর হত্যার পর মরদেহ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।

শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আজিজুর রহমান বলেন, ‘জন্ম থেকে দেখে আসছি, সীমান্তে বিএসএফ কাউকে পেলেই গুলি করে। শত শত মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। তবে এখন আর গুলি করছে না। এখন বৈদ্যুতিক শক, কুপিয়ে ও অ্যাসিডে পুড়িয়ে হত্যা করছে।’

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার পুলিশ পরিদর্শক তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘নদী থেকে উদ্ধার তিনটি মরদেহেই মারাত্মক নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।’

স্থানীয় রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘সীমান্ত এলাকার ২৫ কিলোমিটার অঞ্চল এখন ভয়ংকর। নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে জেলেরা হত্যার শিকার হচ্ছেন। আগের মতো গুলি নয়, বরং নির্যাতন করে নদীতে ফেলে দেওয়া হচ্ছে মরদেহ।’

নিহত সেলিম রেজার দুলাভাই আজিম উদ্দিন বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে সেলিম ও আরও একজনকে ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। পরে শনিবার নদীতে তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। মরদেহে দেশীয় অস্ত্রের আঘাত ছিল।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য সমির উদ্দিন জানান, ‘বিএসএফের নির্যাতনের মাত্রা বেড়েছে। মুসলিমদের প্রতি তাদের ক্ষোভ স্পষ্ট। নিহতদের মধ্যে একজনের দাড়ি ছিল, তাকেই বেশি নির্যাতন করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহদুম রিংকু বলেন, ‘মরদেহে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। তবে আইনি ব্যবস্থা নিতে গেলে স্বজনদের অভিযোগ প্রয়োজন। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি।’