সিরিয়ার ওপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
দেশটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে অপসারণের পর দেশটির পুনর্গঠনের সহায়তায় উদ্দেশ্যে সিরিয়ার ওপর আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ইইউ’র ২৭টি সদস্য দেশের রাষ্ট্রদূতরা ব্রাসেলসে এক বৈঠকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এ সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ইইউ পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের বৈঠকে মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মন্ত্রীদের হাতেই থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কূটনীতিকরা।
পদক্ষেপটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন যুক্তরাষ্ট্রও সম্প্রতি সিরিয়ার ওপর আরোপিত কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে।
আল-জাজিরার ইউরোপীয় ইউনিয়ন সদর দপ্তর থেকে সাংবাদিক হাশেম আহেলবারা জানিয়েছেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি প্রমাণ করে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিরিয়ায় বর্তমান শাসনব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং সেখানে আর্থিক স্থিতিশীলতা ও জনজীবনের মানোন্নয়নে সহায়ক আর্থিক লেনদেনকে স্বাগত জানাচ্ছে।’
আসাদ শাসনামলে ২০১২-১৩ সালে সিরিয়ার পরিবহন, জ্বালানি ও ব্যাংকিং খাতে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
দেশটির নতুন নেতৃত্ব সিরিয়াকে বছরের পর বছর ধরে চলা স্বৈরাচারী শাসন এবং গৃহযুদ্ধ থেকে পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করার জন্য বিধিনিষেধ শিথিল করার আহ্বান জানিয়েছে।
এএফপি-কে দেওয়া তথ্যে ইউরোপীয় কূটনীতিকরা জানান, নতুন চুক্তির আওতায় সিরিয়ার ব্যাংকগুলোকে বৈশ্বিক আর্থিক লেনদেন থেকে বিচ্ছিন্ন করার বিধিনিষেধ এবং দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ ফ্রিজ করার পদক্ষেপ প্রত্যাহার করা হতে পারে।
তবে একই সঙ্গে জানানো হয়েছে, ইইউ কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে, যারা সম্প্রতি সিরিয়ার আলাউইট সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে সংঘটিত হামলার পেছনে ভূমিকা রেখেছে।
আসাদ প্রশাসনের বিরুদ্ধে আরোপিত অস্ত্র বিক্রির নিষেধাজ্ঞা এবং বেসামরিক নাগরিকদের দমনমূলক ব্যবহারের উপযোগী যন্ত্রপাতি সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিরিয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক খাতে ইইউ আংশিকভাবে নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছিল। তখন থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল যে, আরও বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য ইউরোপীয় দেশগুলো প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ইইউ কর্মকর্তারা বলছেন, যদি সিরিয়ার নতুন সরকার সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি না রাখে বা গণতন্ত্রমুখী পদক্ষেপে ব্যর্থ হয়, তাহলে পূর্বের নিষেধাজ্ঞাগুলো আবারও কার্যকর করা হতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :