তেহরানে ইসরায়েলি হামলায় দেশটির খাতাম আল-আনবিয়া কেন্দ্রীয় কমান্ডের মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশীদ ও তার ছেলে নিহত হয়েছেন। একই হামলায় ইসলামি বিপ্লবী গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি এবং দুই শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি ও ফারেইদুন আব্বাসিও প্রাণ হারিয়েছেন।
এই হামলা তেহরানের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে চালানো হয়। এতে অনেক বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন। হামলার ফলে ইমাম খোমেইনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সমস্ত ফ্লাইট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, মোহাম্মদ মাহদি তেহরানচি ইসলামি আজাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর ফারেইদুন আব্বাসি ইরানের পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক প্রধান পদে ছিলেন।
এই হামলা দুই দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকা ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পারমাণবিক আলোচনার আগে সংঘটিত হয়েছে। তাই অনেকেই মনে করছেন, এই সময়টিকেই লক্ষ্য করে হামলাটি চালানো হয়েছে।
ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, হামলার জবাবে ইসলামিক রিপাবলিক কঠোর প্রতিক্রিয়া দেবে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবলফাজল শেকারচি বলেন, শত্রুরা কঠিন মূল্য দেবে এবং ইরানের সশস্ত্র বাহিনী কঠোর জবাবের জন্য প্রস্তুত।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, হামলায় ইরানের আরও অনেক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিশেষজ্ঞ নিহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘নেশন অব লায়ন্স’ নামের একটি পরিকল্পিত অভিযানের মাধ্যমে এই হামলা চালিয়েছে। টাইমস অব ইসরায়েলসহ দেশটির সামরিক সূত্র জানায়, দুই ডজনের বেশি যুদ্ধবিমান এই অভিযানে অংশ নিয়েছিল। হামলা ছিল গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক এবং নিখুঁত পরিকল্পিত।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল ইরানের পরমাণু কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক সক্ষমতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা।
অন্যদিকে, ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম আইআরএনএ ও প্রেস টিভি জানিয়েছে, হামলায় নারী, শিশু ও অন্যান্য বেসামরিক ব্যক্তিরাও মারা গেছেন। তবে ইসরায়েল দাবি করেছে— তারা শুধুমাত্র সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে এবং আবাসিক এলাকাগুলোতে আঘাত করার কথা অস্বীকার করেছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক হুমকি পুরোপুরি নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সূত্র: তাসনিম নিউজ
আপনার মতামত লিখুন :