ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতির পর ইসলামিক রিপাবলিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ইরান। ‘রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা’, ‘সামাজিক বিশৃঙ্খলা’ এবং ‘বিদেশি যোগাযোগ’ ও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নিচ্ছে দেশটি।
বিশ্লেষক ও মানবাধিকারকর্মীরা সতর্ক করেছেন, সামরিক যুদ্ধের পাশাপাশি এখন ইরান অভ্যন্তরীণ ‘নিরাপত্তা শুদ্ধি অভিযানে’ নেমেছে। এরই অংশ হিসেবে কেরমানশাহ প্রদেশে গুপ্তচরবৃত্তি ও রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারের অভিযোগে প্রায় ৭০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রদেশটির প্রধান কৌঁসুলি হামিদরেজা কারিমি জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে এক ইউরোপীয় নাগরিককে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করা হয়েছে। একই সঙ্গে অল্প কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে, তবে বেশির ভাগের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারের অভিযোগ রয়েছে।
সরকারি সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে অন্তত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। বিভিন্ন শহরে আরও ডজনখানেক মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের অপরাধ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কার্যক্রম অথবা সন্দেহজনক যোগাযোগকে দায়ী করা হয়েছে।
তাসনিম সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, হরমোজগান প্রদেশে এক ইউরোপীয় নাগরিককে ‘পর্যটকের ছদ্মবেশে’ গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) ফার্স নিউজ জানায়, হামেদান প্রদেশে আরেক ইউরোপীয় নাগরিককে ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
এর আগে, রোববার কেরমানশাহ প্রদেশ থেকে আরও একজন ইউরোপীয়কে একই অভিযোগে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মেহর নিউজ।
এ ছাড়া ২০ জুন ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, মার্কাজি প্রদেশে এক ‘ইহুদি-জার্মান’ নাগরিককে সেনাবাহিনীর সংবেদনশীল ও পারমাণবিক এলাকাগুলোর তথ্য সংগ্রহের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। এ নিয়ে অন্তত চারজন ইউরোপীয় নাগরিক গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যেই ইরানের পার্লামেন্ট গোয়েন্দা ও অনুপ্রবেশসংশ্লিষ্ট মামলাগুলোতে দ্রুত বিচার ও কঠোর সাজা নিশ্চিত করতে নতুন আইন পাস করেছে। বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র জানান, ‘আগের আইনে অনেক গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে বিচার করা সম্ভব হতো না। এখন আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে পারব।’
এ ছাড়া, ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ইদ্রিস আলী, আজাদ শোজাই এবং রসুল আহমেদ রসুল নামে তিনজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান।
ইরানে ইসরায়েলি গুপ্তচর সক্রিয় থাকার সন্দেহে আতঙ্কিত ইরান সরকার। দেশের অভ্যন্তরের শত্রু দমনে ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্যই এমন কঠোর অবস্থান নিয়েছে ইরান সরকার।
আপনার মতামত লিখুন :