ফিলিস্তিনের গাজায় ‘ইসরায়েল’ আগ্রাসন শুরুর পর, এখন পর্যন্ত উপত্যকায় আইডিএফ অন্তত ১৮ হাজার ৫৯২ শিশুকে হত্যা করেছে। নিহত শিশুদের মধ্যে কেউ কেউ জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তাসংস্থা আনাদোলু শুক্রবার (১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ।
এতে বলা হয়, নিহত শিশুদের অনেকেই ছিল জীবনের একেবারে প্রারম্ভে। কেউ কেউ জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলি বিমান হামলা বা বোমার আঘাতে মারা গেছে। উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিহতদের মধ্যে ৯ নবজাতক জন্মদিনেই, ৫ জন প্রথম দিনে, ৫ জন দ্বিতীয় দিনে এবং ৮ জন তৃতীয় দিনে নিহত হয়। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, নিহত শিশুদের মধ্যে ১ মাস বয়সী ৮৮ জন, ২ মাস বয়সী ৯০ জন এবং ৩ মাস বয়সী ৭৮ জন ছিল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলা শুরুর পর থেকে ইসরায়েল গাজায় লাগাতার সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই নিরন্তর হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং সেখানে তীব্র খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে।যার ফলে উপত্যকায় অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে দিন দিন। সবশেষ ২৪ ঘন্টায় গাজায় অনাহারে মারা গেছে কমপক্ষে ২ জন। এ নিয়ে গাজায় অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৯ জনে, যাদের মধ্যে কমপক্ষে ৯০ শিশু রয়েছে। এছাড়া, গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে কমপক্ষে ১১ শ’র বেশি মানুষ ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
এদিকে সোমবার (২৮ জুলাই) ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠন ‘বেটসেলেম’ ও ‘ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস-ইসরায়েল’ গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করে। তারা বলেছে, পরিকল্পিতভাবে ফিলিস্তিনি সমাজকে ধ্বংস করা এবং গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে চূর্ণ করে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত বছরের নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ায়োভ গালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এছাড়া গাজায় ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও গণহত্যার অভিযোগে মামলা চলছে।
আপনার মতামত লিখুন :