ফিলিস্তিনের গাজায় আকাশ থেকে ফেলা ত্রাণে ১৫ বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে। নিহত ফিলিস্তিনির নাম জাকারিয়া ঈদ বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। মধ্য গাজার নেটজারিম এলাকায় ত্রাণের অপেক্ষায় ছিল জাকারিয়া।
আলজাজিরার প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, বিমান থেকে ফেলা ত্রাণ জাকারিয়ার মাথার ওপর পড়ে। ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত হয়ে টলে পড়ে যায় জাকারিয়া। পরে অন্যান্য ত্রাণপ্রত্যাশীরা তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যায়। জাকারিয়ার মৃত্যুর পর হাসপাতালে আহাজারি করতে দেখা যায় তার পিতাকে।
চলতি বছরের ২৭ মে থেকে গাজায় ত্রাণসহায়তা বিতরণ করে আসছে বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সহায়তায় গাজায় ত্রাণ বিতরণের দায়িত্ব পায় অনভিজ্ঞ এ সংস্থা। সংস্থাটির ত্রাণ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে গাজায় মারা গেছেন ১ হাজার ৭৪৩ জন। আহত হয়েছেন ১২ হাজার ৫৯০ জনের বেশি।
পর্যাপ্ত ত্রাণ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশের চরম নিরাপত্তাহীনতার কারণে ‘জিএইচএফ’ জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থার তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে। অনেকেই সংস্থাটির ত্রাণকেন্দ্রগুলোকে ‘মৃত্যুকূপ’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। যেখানে ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রতিদিনই মানুষ ইসরায়েলি হামলার শিকার হচ্ছেন। গাজায় এমন সময় এসব হামলা হচ্ছে, যখন ত্রাণ সংস্থা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সেখানে ব্যাপক হারে খাদ্যসংকট বেড়ে যাওয়ার বিষয়ে সতর্কতা দিয়েছেন।
সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় অন্তত ৪০ জন ক্ষুধার্ত ত্রাণপ্রত্যাশী নিহত হয়েছেন বলে জানায় সংবাদমাধ্যম ‘মিডল ইস্ট আই’। এ ছাড়া শনিবার খাবার ও চিকিৎসার অভাবে উপত্যকাটিতে মারা গেছে আরও ১১ জন। এ নিয়ে গাজায় এখন পর্যন্ত অনাহারে মারা গেছেন ২১২ জন, যাদের মধ্যে ৯৮ জন শিশু বলে জানায় গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইউনিসেফের হালনাগাদ তথ্য বলছে, জুন মাসের চেয়ে জুলাই মাসে গাজায় অপুষ্টিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি শিশুর সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। জুনে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছিল ৬ হাজার ৩৪৪ জন। আর জুলাইয়ে ভর্তি হয়েছে ১১ হাজার ৮৭৭ জন। তাদের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছিল।
সবমিলিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলা ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৬১ হাজার ৩৬৯-এ পৌঁছেছে। এসব হামলায় আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৫২ হাজার ৮৫০ জন।
আপনার মতামত লিখুন :