‘ইসরায়েল’র লাগাতার হামলা, অবরোধ আর দুর্ভিক্ষে গাজায় প্রতিদিন বাড়ছে লাশের মিছিল। সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণে কমপক্ষে আরও ৬৮ জন নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার (৬ আগস্ট) পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৩৬৮ জনে।
রোববার (৭ সেপ্টেস্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ করে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে আছেন, যাদের উদ্ধার করতে পারছেন না উদ্ধারকর্মীরা।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে আরও ২৩ ফিলিস্তিনি নিহত এবং অন্তত ১৪৩ জন আহত হয়েছেন। চলতি বছরের মে মাসের ২৭ তারিখ থেকে এ পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৮৫ এবং আহত হয়েছেন ১৭ হাজার ৫৭৭ জনের বেশি মানুষ।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে আরও ৬ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন, তাদের মধ্যে একজন শিশু। এতে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৮২ জনে, যার মধ্যে ১৩৫ শিশু।
গত ২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। ফলে ২৪ লাখ মানুষের এই ভূখণ্ড এখন ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে। জাতিসংঘের সহায়তায় পরিচালিত খাদ্য নিরাপত্তা জরিপে ইতোমধ্যেই গাজার উত্তরাঞ্চলে দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হওয়া গেছে। সংস্থাটি আশঙ্কা করছে, চলতি মাসের শেষ নাগাদ এ দুর্ভিক্ষ আরও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়বে।
এ ছাড়া গত ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল নতুন করে গাজায় হামলা শুরু করেছে। এ হামলায় এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৮২৮ জন নিহত এবং ৫০ হাজার ৩২৬ জন আহত হয়েছেন। এতে জানুয়ারিতে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যত ভেঙে গেছে।
গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এ ছাড়া গাজায় যুদ্ধ চালানোর দায়ে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) মামলা চলছে।