ঢাকা সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উচ্চ সতর্কতা জারি

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২৫, ১১:৩১ এএম
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেছেন, পাকিস্তান উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। দেশের জনগণ যেন মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন। 

দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, জনগণকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। 

খাজা আসিফের এ বক্তব্য পাকিস্তানের সাম্প্রতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সরকারের পক্ষ থেকে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। 

এ ছাড়া, দেশের নিরাপত্তা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

খাজা আসিফের এ বক্তব্য পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলে আলোচনার সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হবে। তবে, জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

এর আগে, ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগ্রাম এলাকায় সম্প্রতি সংঘটিত প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ উত্তপ্ত পরিস্থিতি যুদ্ধে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। 

গত ২২ এপ্রিল বিকেলে জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার বৈসরণ তৃণভূমিতে সশস্ত্র হামলা চালায় কাশ্মীরভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। 

হামলায় অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হন এবং বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হন। নিহতদের সবাই পুরুষ এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে আগত পর্যটক ছিলেন।

এ হামলাকে ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সন্ত্রাসী ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

হামলার জন্য পাকিস্তানকে সরাসরি দায়ী করে ভারত সরকার কড়া প্রতিক্রিয়া জানায়। তারা সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করার পাশাপাশি কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে চাপ প্রয়োগের নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে। 

পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য স্থল ও আকাশপথ সীমাবদ্ধ করে দেয় এবং সীমান্তে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করে।

এ প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহম্মদ আসিফ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমরা মনে করছি, ভারতীয় সামরিক বাহিনীর একটি বড় ধরনের অভিযান আসন্ন। পরবর্তী দুই-তিন দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু ঘটলে এই সময়ের মধ্যেই ঘটবে, আর না ঘটলে আমরা ধরে নিতে পারি একটি বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব হয়েছে।’

পাকিস্তানের দুটি প্রধান সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ ও সামা টিভিকে দেওয়া আরও দুটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এই অঞ্চলে যুদ্ধের আশঙ্কা এখন খুবই বাস্তব। আমাদের সবাইকে মানসিক ও কৌশলগতভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

কাশ্মীর সীমান্তে ইতিমধ্যেই ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গুলিবিনিময় চলছে, যাতে বেশ কয়েকজন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বেড়েছে, কারণ পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধ বিশ্ব রাজনীতিতেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।