জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউ ইয়র্ক সিটিতে জড়ো হচ্ছেন বিশ্ব নেতারা। ইতোমধ্যে আগত যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, মাল্টা, অ্যান্ডোরা, মোনাকো ও লুক্সেমবার্গসহ বেশ কয়েকটি দেশ মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলি আগ্রাসনে ধ্বংসপ্রায় ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের প্রান্তে অনুষ্ঠিত দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান সম্মেলনে বেলজিয়ামও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন। তার ভাষণ এমন সময় আসছে যখন বহুপাক্ষিকতার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ নতুন করে যাচাইয়ের মুখে। গাজা থেকে ইউক্রেন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে চলমান সংকটের প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্র এখনো বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত কি না।
ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদের আট মাসের মাথায় সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এর পাশাপাশি আরব ও মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেখানে তিনি গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন। তবে হোয়াইট হাউস এ বৈঠকের সুনির্দিষ্ট সময় প্রকাশ করেনি।
ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ট্রাম্প প্রশাসন জাতিসংঘের একাধিক সংস্থার কাছ থেকে মার্কিন সমর্থন প্রত্যাহার করেছে, যা সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে। বিশ্বের জটিল দ্বন্দ্ব সমাধানে ট্রাম্প সীমিত সাফল্য অর্জন করেছেন। রয়টার্স পর্যালোচনা করা পরিকল্পনা নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন এই সপ্তাহে আশ্রয় ও মানবিক সুরক্ষা সম্পর্কিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী কাঠামোতে পরিবর্তনের আহ্বান জানাতে পারে।
ট্রাম্প জাতিসংঘকে ‘অসাধারণ সম্ভাবনা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তবে বলছেন সংস্থাকে কার্যকরভাবে কাজ করতে হলে ‘একত্রিতভাবে কাজ’ করতে হবে। তিনি বিভিন্ন সংঘাতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ ব্যর্থ হয়েছে এমন অভিযোগও তুলেছেন। চলতি সপ্তাহে প্রায় ১৫০ জন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান সাধারণ পরিষদের চেম্বারে ভাষণ দেবেন। অধিবেশন স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় শুরু হবে, যেখানে ট্রাম্প দ্বিতীয় বক্তা হিসেবে ভাষণ দেবেন। ব্রাজিল সর্বপ্রথম ভাষণ দেবে।
এদিকে ট্রাম্প সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, মিশর, জর্ডান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তানের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেছেন, বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ আরব ও মুসলিম দেশগুলোকে একত্রিত করা হবে, তবে এজেন্ডা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
পরিকল্পনার সঙ্গে পরিচিত এক সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, বৈঠকে ট্রাম্প গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রস্তাব উপস্থাপন করতে পারেন। এটি যুদ্ধের অবসান, বন্দিদের মুক্তি এবং হামাসকে বাদ দিয়ে একটি শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠার ওপর কেন্দ্রীভূত। অ্যাক্সিওস জানিয়েছে, ওয়াশিংটন চায় আরব ও মুসলিম দেশগুলো গাজায় সৈন্য পাঠাক, যাতে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহার সহজ হয় এবং পুনর্গঠন ও অন্তর্বর্তীকালীন কর্মসূচিতে অর্থায়ন নিশ্চিত করা যায়।