ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মলদোভা ‘দখল’ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইইউ: মস্কো

বিশ্ব ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৫:০১ পিএম
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মলদোভার পতাকা। ছবি- সংগৃহীত

রাশিয়ার ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস (এসভিআর) দাবি করেছে, ইউরোপীয় দেশগুলো (ইইউ) পূর্ব ইউরোপের দেশ মলদোভায় সামরিক হস্তক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংস্থাটি সতর্ক করে জানিয়েছে, ব্রাসেলসের ‘ইউরোক্র্যাটরা’ নিশ্চিত করতে চাইছে যে রাজধানী চিসিনাউ রাশিয়াবিরোধী নীতি অব্যাহত রাখে। এছাড়াও আসন্ন সংসদ নির্বাচনের পর দেশটিকে ‘দখল’ করার জন্য তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসভিআর জানায়, ইউরোপীয় ন্যাটো বাহিনীকে ইতোমধ্যেই মলদোভার সীমান্ত ঘেঁষা রোমানিয়ায় জড়ো হতে দেখা গেছে। পাশাপাশি, ইউক্রেনের ওডেসা অঞ্চলে সৈন্য মোতায়েনের প্রস্তুতিও চলছে বলে দাবি করেছে তারা। এর উদ্দেশ্য, মলদোভার বিচ্ছিন্ন অঞ্চল ট্রান্সনিস্ট্রিয়াকে ভয় দেখানো।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের সামরিক কর্মীরা ইতোমধ্যেই ওডেসায় পৌঁছে গেছে।

ট্রান্সনিস্ট্রিয়া মলদোভার পূর্ব সীমান্তের একটি বিচ্ছিন্ন অঞ্চল এবং আনুষ্ঠানিকভাবে প্রিডনেস্ট্রোভিয়ান মোল্দাভিয়ান প্রজাতন্ত্র (পিএমআর) নামে পরিচিত। ডিনিস্টার নদী ও ইউক্রেনের ওডেসা অঞ্চলের মাঝের সরু ভূখণ্ডে বিস্তৃত এ এলাকা আন্তর্জাতিকভাবে মলদোভার অংশ হিসেবে স্বীকৃত হলেও বাস্তবে আলাদা প্রশাসনিক কাঠামোয় পরিচালিত হচ্ছে।

১৯৯২ সালের সংক্ষিপ্ত যুদ্ধের পর থেকেই ট্রান্সনিস্ট্রিয়া কার্যত স্বাধীন রাষ্ট্রের মতো অবস্থান করছে। নিজস্ব সরকার, সেনাবাহিনী, মুদ্রা এবং পাসপোর্ট ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে তারা, যা মলদোভা থেকে এর বিচ্ছিন্ন অবস্থান আরও দৃঢ় করেছে।

এ অঞ্চলের কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান এবং সোভিয়েত আমলের বিশাল ও পুরোনো অস্ত্রভাণ্ডারের উপস্থিতি একে বিশেষভাবে স্পর্শকাতর করে তুলেছে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ট্রান্সনিস্ট্রিয়াকে ঘিরে সম্ভাব্য উত্তেজনা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগ আরও বাড়ছে।

এসভিআর বলছে, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের ফল জাল করার পরিকল্পনা রয়েছে, যাতে জনগণকে রাস্তায় নামিয়ে প্রতিবাদে উসকে দেওয়া যায়। এরপর মলদোভার প্রেসিডেন্ট মাইয়া সান্দুর অনুরোধে ইউরোপীয় বাহিনী দেশটিতে প্রবেশ করবে এবং জনগণকে ‘ইউরোপীয় গণতন্ত্রের আড়ালে একনায়কতন্ত্র’ মেনে নিতে বাধ্য করবে।

এর আগে জুলাই মাসে এসভিআর সতর্ক করেছিল, ন্যাটো মলদোভাকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটি সামরিক ‘বিধ্বংসী ঘাঁটিতে’ পরিণত করছে।

এদিকে মলদোভার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইগর ডোডনও সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন মলদোভাকে ‘কামানের খোরাক’ হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।

সূত্র: আরটি, তাস, আনাদোলু