জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই জলবায়ু ন্যায়বিচার বেছে নিতে হবে।’ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে এই আহ্বান জানান তিনি। এ সময় তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে বক্তব্য দেন।
জাতিসংঘ মহাসচিব সতর্ক করেন বলেন, পরিষ্কার জ্বালানির ভবিষ্যৎ এখন আর দূরের প্রতিশ্রুতি নয়, বরং বাস্তবে উপস্থিত। এই সংকটের মুহূর্তে জাতিসংঘ আগের চেয়ে এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।
তিনি বলেন, কোনো সরকার, শিল্প বা বিশেষ স্বার্থগোষ্ঠী এই অগ্রযাত্রা থামাতে পারবে না। তবে কিছু পক্ষ সচেতনভাবে পরিষ্কার জ্বালানির পথে বাধা সৃষ্টি করছে, যা অর্থনীতির ক্ষতি করছে, জ্বালানির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং এক ঐতিহাসিক সুযোগকে নষ্ট করছে। জীবাশ্ম জ্বালানিকে তিনি ‘বাজিতে হেরে যাওয়া’ হিসেবে উল্লেখ করেন।
গুতেরেসের এই অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জ্বালানি নীতির সঙ্গে স্পষ্ট বৈপরীত্য তৈরি করেছে। হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্প বায়ু ও সৌরশক্তি সুবিধার প্রসারে বাধা দেন। অথচ এগুলো ছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু ও জ্বালানি কর্মসূচির মূল ভিত্তি।
ট্রাম্প বারবার নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে অবিশ্বস্ত ও ব্যয়বহুল আখ্যা দিয়েছেন। তার দাবি, নবায়নযোগ্য উৎসগুলো নির্ভরযোগ্য জ্বালানির বিকল্প নয়, বরং সেগুলো বিদেশি-নিয়ন্ত্রিত সরবরাহ শৃঙ্খলের ওপর নির্ভর করে এবং পরিবেশকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এদিকে, পরিষ্কার জ্বালানি প্রকল্পের জন্য ট্রাম্প প্রশাসনের সময় ফেডারেল সহায়তা নিশ্চিত করতে গৃহীত পদক্ষেপের একটি পূর্ণাঙ্গ সময়রেখা প্রকাশ করা হয়েছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব তার ভাষণে বলেন, ‘বিশ্ব আজ আমাদের অনন্য বৈধতা, আমাদের আহ্বায়ক শক্তি, জাতিগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষমতা এবং বিভক্তি দূর করে সামনে থাকা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাশা করছে।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, জাতিসংঘকে আরও শক্তিশালী, কার্যকর এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে।
প্রতিনিধিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সঠিক সিদ্ধান্ত কী, তা জানা যথেষ্ট নয়। আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি, সেই সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবে কার্যকর করতে হবে সমবেতভাবে।’
বিশ্বকে কখনো হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয় এবং তিনিও শান্তি, মর্যাদা, ন্যায়বিচার ও মানবতার লক্ষ্যে কখনও হাল ছাড়বেন না।
এর মাধ্যমে মহাসচিব তার বক্তব্য শেষ করেন।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স, সিএনএন