ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের অংশে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যা যান চলাচলের জন্য চরম ঝুঁঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক টানা বৃষ্টি আর প্রতিদিন প্রায় ৫০ হাজার ছোট-বড় ও ভারী যানবাহন চলাচল মহাসড়কের কার্পেটিং উঠে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ধীরে ধীরে খানাখন্দগুলো বড় হয়ে আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
মহাসড়কের কাঁচপুর সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে মেঘনা সেতুর টোলপ্লাজা পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার মহাসড়ক যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে চলাচলকারী যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের জন্য।
গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনারগাঁয়ের অংশের কাঁচপুর সেতুর ঢালু থেকে জাংগাল, মল্লিকপাড়া, চেঙ্গাইন, মদনপুর, কেওঢালা, মালিবাগ, লাঙ্গলবন্দ, দড়িকান্দি, টিপুর্দী, ছোট সাদিপুর, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এবং মেঘনা টোলপ্লাজা পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিলোমিটার অংশে মহাসড়কের দুই পাশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে কার্পেটিং উঠে গেছে। সম্প্রতি টানা বৃষ্টির ফলে মহাসড়কে পানি জমে ছোট-বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুতগতির যানবাহনের চালকদের জন্য এটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। যে ফাঁদে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে দূরপাল্লার যানবাহনসহ পথচারীরা।
বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা অসহায়ত্ব নিয়ে জানান, মহাসড়কে যত্রতত্র ছোট-বড় গর্ত থাকায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে অনেক যানবাহন। তবে সড়কের এমন দশা থেকে দ্রুত স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, টানা বৃষ্টি ও মহাসড়কের পাশের ঘাস ও ঝোপঝাড়ের কারণে পানি নিষ্কাশনের সঠিক ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির সময় পানি জমে এ খানাখন্দ সৃষ্টি হচ্ছে। তবে কিছুদিন আগেই খানাখন্দগুলো মেরামত করেছেন বলেও দাবি তাদের। হয়তো বৈরী আবহাওয়া এবং বৃষ্টির কারণে ব্যস্তময় এ সড়কে পুনরায় খানাখন্দ সৃষ্টি হতে পারে।
শ্যামলী পরিবহনের চালক কবির মিয়া বলেন, মহাসড়কে এমন খানাখন্দে দুর্ঘটনার ভয় ও গভীর রাতে ছিনতাইয়ের ভয়ও রয়েছে। মহাসড়কের এ পথটি ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের হটস্পট বলে পরিচিত। দ্রুত এ সড়কের সংস্কার দাবি জানাই।
তিনি আরও বলেন, মহাসড়কের এ অংশটিতে বছরজুড়েই জোড়াতালি দিয়ে কাজ করা হয়। এক সপ্তাহ পরই জোড়াতালির এসব কাজের কার্পেটিং উঠে যায়। স্থায়ীভাবে মেরামত করা না হলে সড়কের বেহাল অবস্থা দূর হবে না।
প্রাইভেটকারচালক মফিজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির কারণে গর্তের সংখ্যা ও গভীরতা অনেক বেড়েছে। গাড়ির চাকা গর্তে পড়লেই নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। এ যেন সড়ক নয় মারণফাঁদ।
দাউদকান্দি থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী তারানা শারমিন বলেন, ইদানীং মহাসড়কে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। দিনের বেলায় গর্তগুলো দেখা গেলেও রাতে গাড়ি চালানো ও চলাচল করা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। খানাখন্দের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে নিয়ে চলাচল করতে হয়।
হানিফ পরিবহনের যাত্রী শাখাওয়াত বলেন, ইদানীং মহাসড়কে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। দিনের বেলায় গর্তগুলো দেখা গেলেও রাতে গাড়ি চালানো ও চলাচল করা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। খানাখন্দের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে নিয়ে চলাচল করতে হয়।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপদের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর রহিম বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে মহাসড়কে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। এরই মধ্যেই কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। আশা করি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মহাসড়কে আর কোনো খানাখন্দ থাকবে না।
আপনার মতামত লিখুন :