বেনাপোল কাস্টমস হাউস এলাকা ভারি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। টানা কয়েক দিনের বর্ষণে বেনাপোল কাস্টম হাউসের আশপাশে পানি জমে স্থবির হয়ে পড়েছে কাস্টমসের স্বাভাবিক কার্যক্রম। অন্যদিকে টানা বৃষ্টিতে দেশের সবচেয়ে বড় স্থলবন্দর বেনাপোলে পণ্য লোড-আনলোড ব্যাহত হয়েছে। বন্দর ও কাস্টমস এলাকার মধ্যে পানি থইথই করছে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পানি যতটুকু নিষ্কাশন করা হচ্ছে, আবার বৃষ্টিতে পানি জমে যাচ্ছে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাঁটু সমান পানি মাড়িয়ে কাস্টম হাউসে প্রবেশ করছেন। কাস্টমস কর্মকর্তারা গাড়িতে চলাচল করলেও অন্যরা ভ্যান, ইজিবাইকে যাচ্ছে কাস্টমস অফিসে। এতে করে রাজস্ব আদায়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজেও ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃষ্টির পানি জমে যাওয়ার কারণে বর্তমানে একটি মাত্র সাব-মারসিবল মোটরের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নাজুক থাকায় পর্যাপ্ত পানি বের করে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, কাস্টম হাউসের সামনে, মসজিদ সংলগ্ন এলাকা ও খেলার মাঠ এখন পানির নিচে। দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, পানি নিষ্কাশনের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে একটি মাত্র মোটরে পুরো কাস্টম হাউস এলাকার পানি বের করা সম্ভব নয়। দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমাদের স্টাফ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কাস্টমস হাউসে আসতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এদিকে বুধবার সকাল থেমে থেমে বৃষ্টিতে বন্দরের পণ্য খালাস কার্যক্রমও ধীরগতিতে চলছে। বেনাপোল স্থলবন্দর ও আশপাশের এলাকায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে কোটি কোটি টাকার আমদানি-রপ্তানি পণ্য খোলা আকাশের নিচে ভিজে যাচ্ছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। মালামাল ভিজে যাওয়ার কারণে অনেকে ইচ্ছাথাকা সত্ত্বেও আমদানিকৃত পণ্য খালাস করছেন না। ভারত থেকে আসা ট্রাক থেকে তেমন পণ্যও বন্দরের অভ্যন্তরে আনলোড করা হয়নি। বিশেষ জরুরি পণ্যগুলো ট্রাকের উপর ত্রিপল টাঙিয়ে লোড করতে দেখা গেছে। বৃষ্টির কারণে আমদানি-রপ্তানি কাজেও ব্যাঘাত ঘটছে। বেনাপোল স্থলবন্দর দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থলবন্দর। প্রায় ৮০ শতাংশ স্থল বাণিজ্য হয় এ বন্দর দিয়ে। এ বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হলে দেশের রাজস্ব আদায়েও প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ ও বন্দর সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আপনার মতামত লিখুন :