আগামী অক্টোবরের শুরুতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন। আর মাত্র দেড় মাসেরও কম সময় বাকি। এরই মধ্যে বিসিবি নির্বাচন ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। এত দিন ধরে আলোচনা হচ্ছিল, আসন্ন নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্র্র্র্থী হবেন বিসিবি বর্তমান পরিচালক মাহবুব আনাম। কিন্তু হঠাৎ করেই এই পরিচালক ঘোষণা দিলেন, বিসিবি নির্বাচনই করবেন না তিনি। মাহবুব আনাম সরে দাঁড়ানোর কারণে বিসিবি নির্বাচন ঘিরে এখন নতুন মেরুকরণ হচ্ছে। বিসিবি সভাপতি হিসেবে চারজনের নাম উচ্চারিত হচ্ছে ক্রিকেট পাড়ায়। তারা হলেনÑ বর্তমান সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সৈয়দ আশরাফুল হক, ফারুক আহমেদ ও তামিম ইকবাল খান।
এই চারজনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ফোকাসে রয়েছে আমিনুল ইসলাম বুলবুলের নাম। যদিও নির্বাচন করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন ক্রিকেট দলের সাবেক এই অধিনায়ক। তবে নির্বাচন ছাড়াও তার সামনে বিসিবি সভাপতি হওয়ার বিকল্প পথ খোলা আছে। সরকারের কোটায় বিসিবি পরিচালক হয়ে আবার দায়িত্ব পেতে পারেন বুলবুল। অন্যদিকে, এখনো বিসিবি নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেননি তামিম ইকবাল। বিসিবির পরবর্তী সভাপতি হিসেবে তার নামও অনেক বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। কারণ, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে তামিমের সুসম্পর্কও রয়েছে। তা ছাড়া ঢাকার ৭২টি ক্লাবের একটা বড় অংশ তামিমের পাশে আছে। পাশাপাশি জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সমর্থনও পাবেন তামিম। ফলে বিসিবি নির্বাচন করলে প্রবল প্রার্থী হয়ে উঠবেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। অন্যদিকে, বিসিবি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদও। বিসিবি সভাপতি দায়িত্ব পালনকালে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।
অন্যদিকে, বিসিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করা আশরাফুলকেও বিসিবি নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে। তবে যে কেউ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিসিবি সভাপতি পদে আসীন হোন না কেন, সামনে ঝুঁকিতে পড়বেন। কেননা, আগামী বছরের শুরুর দিকে জাতীয় নির্বাচন রয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকার আসার পর বিসিবিতেও রাজনৈতিক প্রভাব পড়াটাই স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে সভাপতি বদল হতে পারে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে বিসিবি সভাপতি পরিবর্তন হয়েছে। সরকারের কোটায় পরিচালক হয়ে ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর একই কায়দায় বিসিবির প্রধান হয়েছেন বুলবুল। ফলে নতুন সরকারের আমলে যে বিসিবি সভাপতি পদে পরিবর্তন আসবে না, তার গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না।
এদিকে, বিসিবি নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলেও এখনো গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়নি। এ নিয়ে দৃশ্যমান কোনো কর্মকা-ও দেখা যাচ্ছে না। গঠনতন্ত্রে সংশোধনী না আনা হলে সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সময় বিসিবিতে যারা প্রভাব বিস্তার করেছিলেন, তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পাবেন। বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলরদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা কাজ করছে, যে কারণে তাদের মধ্যে নির্বাচনি আমেজ বইছে না। নির্বাচন ঘিরে আগ্রহ কম তাদের। আবার অনেক কাউন্সিলরের অভিযোগ, পরিচালকেরা নির্বাচিত হয়ে বোর্ডে এলেও সরকারের পছন্দের লোকই তো শেষ পর্যন্ত হবেন বিসিবি সভাপতি। এত দিন ধরে এটাই নিয়ম হয়ে আসছে। তাহলে পরিবর্তনটা আসলে কোথায়?
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন