সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ১১:৩৯ পিএম

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম

আমাদের একমাত্র লক্ষ্য জাতীয় নির্বাচন

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৫, ১১:৩৯ পিএম

প্রেস সচিব শফিকুল আলম

প্রেস সচিব শফিকুল আলম

  • নির্বাচন কোনোভাবেই পেছানো হবে না
  • নির্বাচন নিয়ে অনাকাক্সিক্ষত পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে
  • সে ব্যাপারেও আমরা সতর্ক আছি
  • গুজব, অপতথ্য এবং ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলব
  • আমাদের দৃঢ়বিশ^াস, নির্বাচনে সব দলই আসবে

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর ১৪ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান বার্তা সংস্থা এএফপির তৎকালীন বাংলাদেশ ব্যুরোপ্রধান শফিকুল আলম। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি শফিকুল আলমকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব পদে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে দায়িত্বের এক বছর পূর্ণ করেছেন তিনি। নানা চড়াই-উতরাই পার করে সরকারের সফলতা, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রূপালী বাংলাদেশের বিজনেস এডিটর রহিম শেখ এবং সিনিয়র রিপোর্টার স্বপ্না চক্রবর্তী। 

প্রশ্ন: নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে? নির্বাচন কোনোভাবেই পেছানোর সম্ভাবনা আছে কি না?

উত্তর: নির্বাচনের তারিখ দেওয়ার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে বলতে পারি, নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই হবে। নির্বাচন কোনোভাবেই পেছানো হবে না। যথাসময়ে নির্বাচন হবে। আরও সহজ করে যদি বলি অন্তর্বর্তী সরকারের এখন প্রধান লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা। যে নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক এবং যেখানে ভোটার আস্থার এক অভূতপূর্ব প্রতিফলন থাকবে। 

প্রশ্ন: নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাই?

উত্তর: নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রস্তুতি খুবই ভালো। তবে আমরা দেখছি, কেউ কেউ এই নির্বাচন নিয়ে অনাকাক্সিক্ষত পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে। সে ব্যাপারেও আমরা সতর্ক আছি। আমরা চেষ্টা করছি, নির্বাচনি পরিবেশ যাতে শান্তিপূর্ণ থাকে, সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এটা যাতে ঐতিহাসিক একটা নির্বাচন হয়, সেই লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে। আমরা জানাতে চাই, নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিদেশি সাংবাদিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, যারা নির্বাচন কাভার করেন, তাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। 

প্রশ্ন: নির্বাচন নিয়ে গুজব, অপতথ্য এবং ভুয়া খবর প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন আপনারা?

উত্তর: আমরা অনেক আগে থেকেই এ বিষয়ে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। এসব খবর প্রতিরোধে বেশ কিছু টুলস আছে, যা আমরা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। যেটা ভুয়া খবর কিংবা ভুয়া ছবি, সেটা জানা যাবে। এ ছাড়া নির্বাচনে এসব অপতৎপরতা রোধে আমরা ফ্যাক্ট চেকারদের সহযোগিতা নিচ্ছি। যারা এ বিষয়ে খুবই পারদর্শী। তবে এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোরও ভূমিকা থাকা উচিত। তারা সঠিক তথ্য জানাবেন। আমাদের দেশের গণমাধ্যমও অনেক বেশি সচেতন এ বিষয়ে। সবচেয়ে বড় কথা, দেশের জনগণ এখন অনেক বেশি সচেতন। তারা জানেন কোনটা সত্য, কোনটা ভুয়া। অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দল, দেশের গণমাধ্যম, বিদেশি সংস্থা এবং ফ্যাক্ট চেকারদের সমন্বয়ে আমরা যদি একটা শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলি, তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব, অপতথ্য এবং ভুয়া খবর ছড়াক না কেন, তাতে কিছু করতে পারবে না। 

প্রশ্ন: জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে আপনার মন্তব্য চানতে চাই 

উত্তর: পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে কি হবে না সেটা আমাদের বিষয় না। পিআর পদ্ধতি নিয়ে এক ধরনের আলোচনা-সমালোচনা চলছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। তবে আমাদের মূল ফোকাস একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা। আমাদের দৃঢ়বিশ^াস, নির্বাচনে সবগুলো দলই অংশ নেবে। গত ১৩ মাসে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের অবস্থান এবং দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের সঙ্গে এক ধরনের ধৈর্য এবং স্থিরতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা আশা করি, আগামীতেও তারা এমন পরিচয়ই দেবেন। রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পেয়েছি, অনেকেই পোস্টার ছাপিয়েছেন। জনগণের কাছে যাচ্ছেন। এতে ভোটারদের মধ্যেও এক ধরনের আস্থা তৈরি হয়েছে। 

প্রশ্ন: নির্বাচনে ভোটারদের আস্থার প্রতিফলন কতটুকু ঘটবে বলে মনে করেন?

উত্তর: গত সাড়ে ১৫ বছরে দেশের মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারেননি। শুধু জাতীয় নির্বাচন নয়, স্থানীয় সরকার, পৌরসভা, এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। ছিল ভাগাভাগির ভোট। কিন্তু এবার আমরা আশ^স্ত করতে চাই, সবাই একটি উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারবেন। সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে ভোটারদের মধ্যেও উৎসাহ-উদ্দীপনা বেশি থাকে। কোনো ভোটার যাতে বলতে না পারেনÑ তিনি ভোট দিতে পারেননি, আমরা সেটি নিশ্চিত করতে চাই। কারণ এবার তরুণ ভোটারদের একটি বড় অংশ ভোট দেওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন। 

প্রশ্ন: গত এক বছরে সরকারের অর্জন কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

উত্তর: একটা বিপ্লব হলে যেই ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়, যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়, বাংলাদেশের মানুষ সেই পরিস্থিতিতে পড়েনি। এটা না হওয়ার মূল কারণ প্রফেসর ইউনূসের লিডারশিপের গুণ। দেখেন তিনি কীভাবে এ সিচুয়েশনগুলো হ্যান্ডল করলেন। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছি। বাংলাদেশকে নতুন করে সবাই চিনছে। আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় পণ্যের দাম কমেছে। গত বছরের নভেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল সাড়ে ১৪ শতাংশ। আগস্টে মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। আমরা আশা করছি, দুই মাসের মধ্যেই মূল্যস্ফীতি ৫-৬ শতাংশে নেমে আসবে। 

প্রশ্ন: জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?

উত্তর: জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের স্বচ্ছ বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে চারটি বড় মামলার বিচার চলছে। শেখ হাসিনার বিচার শুরু হয়েছে। আমাদের বার্তা হচ্ছেÑ বিচারকাজ যাতে স্বচ্ছ এবং নির্দিষ্ট মানদ- অনুযায়ী হয়। সবাই যাতে দেখে, আমরা ন্যায়বিচার করেছি। বিচারটাকে ভালোভাবে যাতে বিচার করা যায়। সঠিকভাবে বিচার করলে শেখ হাসিনার যে শাস্তি হওয়ার সেটাই হবে। আমরা আশা করছি, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের যত নেতাকর্মী জুলাই-আগস্ট হত্যাকা-ে জড়িত, তাদের সবার শাস্তি নিশ্চিত হবে। 

প্রশ্ন: জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ কি জাতীয় পার্টি এড়াতে পারে?

উত্তর: জাতীয় পার্টি নির্বাচনে আসতে পারবে কি পারবে না এটা দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ঠিক করবে। জাতীয় পার্টি নিজেরাই তো গত ১৫ বছর নিজের ভোট নিজেই দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ তো তাদের ভোটাধিকারই কেড়ে নিয়েছে। এটা অস্বীকার করার উপায় নাই যে, জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের দোসর ছিল। জাতীয় পার্টি জনগণকে আশ^স্ত করেছিলÑ আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি। কিন্তু ওরা আসলে দোসর ছিল। আওয়ামী লীগের প্রতিটি নির্বাচনের বৈধতা দিতে জাতীয় পার্টি সব সময় গৃহপালিত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করেছে। নেতৃত্বে ছিল, বিরোধী দলে ছিল, সবই ছিল জাতীয় পার্টি। সবচেয়ে ন্যক্কারজনক বিষয় ছিলÑ ওরা জনগণের সঙ্গে যে প্রতারণা করেছে, তা নিয়ে তারা অনুতপ্ত না। তাদের উচিত ছিল জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া। 

প্রশ্ন: শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার সেই দিনের অভিজ্ঞতা জানতে চাই?

উত্তর: ফ্যাসিস্ট হাসিনার পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পালিয়ে যাওয়ার খবর গত বছর ৫ আগস্ট সবার আগে জানিয়েছিলাম আমি। তখন আমি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপির ব্যুরোপ্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলাম। আপনারা জানেন, সংবাদ সংস্থায় অনামা বা বেনামি সূত্র খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যদি আপনার সূত্র মিথ্যা বলে আপনাকে বিভ্রান্ত করে, তাহলে আপনার ক্যারিয়ার এক মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। তাই আমি চিন্তিত ছিলাম যে আমার অফিস এত বড় ঝুঁকি নেবে কি না। কিন্তু আমার অফিস আমার ওপর ভরসা করতে পেরেছে। একটি সূত্র নয়, আমি তিনটি সূত্র থেকে নিশ্চিত হয়েছিলাম শেখ হাসিনা পালিয়ে যাচ্ছে।  

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!