মঙ্গলবার, ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:০৭ এএম

এ জীবনের চেয়ে মৃত্যু ভালো

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৫, ০৭:০৭ এএম

এ জীবনের চেয়ে মৃত্যু ভালো

এ জীবনের চেয়ে মৃত্যু ভালো

তিন বছর বয়সি আল-মাবুহ। পরিবারের বেঁচে থাকা একমাত্র সদস্য। গাজা সিটির একটি অ্যাপার্টমেন্টে ইসরায়েলের হামলায় তার বাবা-মা ও ভাইবোন নিহত হয়। নানি উম্মে আবু আল-আবেদ তার একমাত্র ভরসা। আল-মাবুহের নানি আলজাজিরাকে বলেন, ‘ভবনের পুরো ধ্বংসস্তূপ তার ওপরে পড়েছিল। আমি জানি না কীভাবে, তবে সৃষ্টিকর্তা তাকে রক্ষা করেছিলেন। সেই একমাত্র। তার মা, বাবা ও দুই ভাইবোন মারা গেছে। আমরা আল-মাবুহের চিৎকার শুনে জেগে উঠলাম। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার মেয়েকে খ-িত অবস্থায় খুঁজে পেলাম, তার স্বামী ও ছেলেমেয়ে চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল।’ গাজা সিটিতে ইসরায়েল বোমা হামলা তীব্রতর করেছে। এতে তাঁবু ও আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা পুরো পরিবার একসঙ্গে নিহত হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, আল-মাবুহ এখন গাজার ৪৯ হাজারেরও বেশি শিশুর মধ্যে একজন, যারা একজন বা বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে। ইউনিসেফের অনুমান, গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ১৭ হাজার শিশু এতিম হয়েছে। 

বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি সাবরিন বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ঘরে বোমা হামলা করে সবাইকে হত্যা করা হয়েছে। তারা আমার ভাইকে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে হত্যা করেছে; তারা তাদের সবাইকে মুছে ফেলেছে। কেউ অবশিষ্ট নেই। এই জীবনের চেয়ে মৃত্যু ভালো।’

মেডিকেল সূত্র আলজাজিরাকে জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজায় অন্তত ৫৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এ ছাড়া রাফার কাছে ত্রাণ নিতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে সাতজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে দখলদার দেশটির হামলায় গাজাজুড়ে কমপক্ষে ৬৪ হাজার ২৪১ জন নিহত হয়েছেন। 

এদিকে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস জানিয়েছে, গাজা উপত্যকা পরিচালনার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি স্বাধীন জাতীয় প্রশাসন গঠনে রাজি তারা। একসময় যেখানে শিশুর হাসি ছিল, এখন সেখানে ধ্বংসস্তূপ। গাজার প্রতিটি অলিতে-গলিতে এখন শুধুই মৃত্যু আর কান্না। ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে প্রায় এক লাখ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেনÑ এই সংখ্যা গাজার মোট জনসংখ্যার চার শতাংশ। ইসরায়েলের প্রভাবশালী পত্রিকা হারেৎজ এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে এই মর্মান্তিক তথ্য প্রকাশ করেছে। এটি শুধু একটি পরিসংখ্যান নয়Ñ এটি একটি মানবিক বিপর্যয়ের হিসাব, যা ২১ শতকে আর কোথাও দেখা যায়নি।

শিশুদের অবস্থাই সবচেয়ে শোচনীয়। ইউনিসেফের হিসাবে, ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ পাঁচ বছরের নিচের অন্তত ১ লাখ ৩২ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়বে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় এ পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০টি পরিবার সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, অর্থাৎ এসব পরিবারের কোনো সদস্যই আর বেঁচে নেই। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় দুই বছরের এই যুদ্ধে অঞ্চলটির ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭০০টি পরিবার ‘নিশ্চিহ্ন’ হয়ে গেছে। অর্থাৎ এসব পরিবারের কেউ বেঁচে নেই। পাশাপাশি প্রায় দুই বছরের যুদ্ধে অঞ্চলটির ৯০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে গাজার প্রায় ৯০ শতাংশ কাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ছয় হাজার ৮০০ কোটি ডলারের। ধ্বংস হয়েছে ৩৮টি হাসপাতাল, ৮৩৩টি মসজিদ এবং দেড় শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৬৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হাসপাতাল সূত্রের বরাত দিয়ে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে ৪৫ জনই গাজা শহরে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। শহরটি দখল এবং সব বাসিন্দাকে দক্ষিণে সরিয়ে দিতে ইসরায়েলি সেনারা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

গাজা উপত্যকা থেকে দক্ষিণ ইসরায়েলের নেটিভোট শহরের দিকে দুটি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন ইসলামিক জিহাদ এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। সংগঠনটি টেলিগ্রামে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানায়, নেটিভোট শহর লক্ষ্য করে রকেট নিক্ষেপ করেছে তাদের যোদ্ধারা। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ইসরায়েলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ) জানায়, গাজা থেকে ছোড়া দুটি রকেটের মধ্যে একটি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম দিয়ে আটকানো হয়েছে, অপরটি জনবসতিহীন খোলা এলাকায় গিয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!