বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫, ০৫:১১ এএম

নির্বাচিত সরকার ছাড়া  প্রথম ডাকসু নির্বাচন

স্বপ্না চক্রবর্তী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৫, ০৫:১১ এএম

নির্বাচিত সরকার ছাড়া  প্রথম ডাকসু নির্বাচন

দীর্ঘ ১৫ বছরের আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনের অবসান হয় গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর ৮ আগস্ট অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। আর এই সরকারের অধীনেই গতকাল মঙ্গলবার প্রথম অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। এর আগে ২০১৯ সালে ডাকসু নির্বাচন হলেও তাতে ছিল ছাত্রলীগের একক আধিপত্য। কিন্তু গতকালের ডাকসু নির্বাচনে কোনো দলের আধিপত্য না থাকায় উৎসবমুখর পরিবেশে দিনভর অনুষ্ঠিত হয় ভোটগ্রহণ। এতে ভোটারদের পাশাপাশি বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীদের সঙ্গে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন ডাকসুর সাবেক নেতারাও।

ডাকসু থেকে নির্বাচিত সব নেতাই জাতীয় পর্যায়ে নেতৃত্বে রয়েছেন। তাই এর গুরুত্ব এত বেশি মন্তব্য করে ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা দাবি, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান কিংবা আশির দশকজুড়ে এরশাদবিরোধী আন্দোলন প্রতিটি ঐতিহাসিক সংগ্রামে ডাকসু গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দিয়েছে এবং ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে জাতীয় রাজনীতিকে প্রভাবিত করেছে। এই ঐতিহাসিক ভূমিকার কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদকে (ডাকসু) বাংলাদেশের ‘দ্বিতীয় সংসদ’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এর আগের নির্বাচনগুলোও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু এবারের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সারাদিন আমরা যে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন উপভোগ করেছি তা এর আগের কোনো নির্বাচনে দেখা যায়নি। একাধিক দল, একাধিক প্রার্থী। জাতীয় নির্বাচনেও এমন দৃশ্য বিরল’। 

জানা যায়, ১৯২১ সালের পহেলা জুলাই ঢাবি প্রতিষ্ঠার পরপরই স্যার এ. এফ. রহমানের উদ্যোগে মুসলিম হল, জগন্নাথ হল ও ঢাকা হলে ছাত্র সংসদ গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরে গঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ। হল ছাত্র সংসদের সাফল্যের পর কেন্দ্রীয়ভাবে ১৯২২-২৩ সালে ঢাবি ছাত্র সংসদ গঠিত হয়। প্রত্যেক হল থেকে তিনজন করে ছাত্র এবং একজন শিক্ষক, আর উপাচার্যের মনোনীত একজন শিক্ষক নিয়ে গঠিত হয় ছাত্র সংসদ। তখন শিক্ষকদের মধ্যে একজন সভাপতি হতেন। ১৯২৩ সালে ছাত্র সংসদ প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত ৩৭ বার ডাকসু নির্বাচন হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে সরকারগুলোর মধ্যে এক ধরনের অনীহা দেখা যায়। ফলে ১৯৭১ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মাত্র ৭ বার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ১৯৯০ সালের পর ২০১৯ সালের নির্বাচনে সহ-সভাপতি হন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল হক নুর এবং সাধারণ সম্পাদক হন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের গোলাম রাব্বানী। 

এ বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. মুশতাক হোসেন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমি ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের (বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র) প্রার্থী হয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই। পরে ১৯৮৯ সালে ঢাবি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হই। এবারের নির্বাচন সম্পূর্ণ ভিন্ন। যদিও ৭০ সালে ইয়াহিয়ার আমলের নির্বাচনও আমি দেখেছি। পরে ৭৯, ৮০, ৮২ তে জিয়াউর রহমানের আমলের নির্বাচন দেখেছি। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সারাদিন ছাত্র-ছাত্রীরা স্বতঃর্স্ফূতভাবে ভোট দিয়েছে। প্রার্থীরাও খুশি আবার ভোটাররাও। এমন চিত্র কম দেখা যায়। আশা করব শুধু ঢাকা নয়; চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং পরবর্তী পর্যায়ে জেলা-উপজেলার কলেজগুলোতেও এমন অবস্থা বিরাজ করা উচিত’।

ডাকসু নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলবে কি নাÑ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন- সে ছাত্ররাজনীতি করুক বা মুক্ত জাতীয় রাজনীতি করুক, তাদের জন্য এটি স্পষ্ট বার্তা। এটি জাতীয় রাজনীতিকেও অনুপ্রাণিত করবে। ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হলে, সেটা ভবিষ্যতে একটি ভালো মানের জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দৃষ্টান্ত হতে পারে। তবে সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে আমার পর্যবেক্ষণ হলো, যারা অতীতে ছাত্র সংগঠন করত, তাদের অনেকেই ইতিবাচকভাবে ডাকসু নির্বাচনের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন’।

আপনার সময়ে ডাকসু নির্বাচনের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল, তখনকার প্রেক্ষাপটের সঙ্গে কীভাবে তুলনা করবেনÑ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমাদের সময় ডাকসু নির্বাচন আন্দোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এখন যদিও আন্দোলন ছাড়াই নির্বাচন হচ্ছে, এটাই একটি বড় অগ্রগতি। আমি মনে করি, ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধিদের মধ্যে ছাত্ররাজনীতিতে আরও সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা তৈরি হবে’।

নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও তাদের নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদভুক্ত সংগঠনগুলোর অনুপস্থিতিতে এবার ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সেসব বিরোধীদের মধ্যে; যারা গত বছর শেখ হাসিনার সরকার পতন আন্দোলনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মাঠে নেমেছিলেন।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!