এক পাশে যমুনার নীল জল, অন্য পাশে যেন সাদা বকের সারি, হাওয়ায় দুলছে কাশফুল। মনে হয়, সবুজের বুকজুড়ে সাদা চাদর বিছানো। শরতের আগমনী বার্তা নিয়ে কাশফুলের সেই মায়াবী দৃশ্য এখন ভ্রমণপিয়াসীদের চোখে পড়ছে সিরাজগঞ্জ শহরের চর-মালশাপাড়া (কাটাওয়াবদা) ক্রসবার-৩ এলাকায়।
শরৎকাল এলেই এখানে ভিড় জমে প্রকৃতিপ্রেমীদের। ভাদ্রের শেষ থেকে কার্তিক পর্যন্ত প্রায় দুই-তিন মাস ধরে এই সাদা-ধূসর ফুলের সাম্রাজ্য বিস্তৃত থাকে যমুনার চরে। গতকাল সোমবার বিকেলে দেখা যায়, প্রায় এক কিলোমিটারজুড়ে সাদা কাশফুল মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কোথাও থোকা থোকা, কোথাও বা ঘন ঝাড়ে ভরপুর।
জেলার বাইরে থেকেও ভ্রমণপিপাসু মানুষ এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন। তরুণ-তরুণীরা ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন। কেউ হাতে গুচ্ছ ফুল নিয়ে আনন্দে মাতছেন, কেউ বা কাশফুল ছিঁড়ে তোড়ার মতো বানাচ্ছেন। আশপাশের শিশুরা দৌড়ঝাঁপে মেতে উঠেছে কাশবনে। বিকেলের পড়ন্ত সূর্য, নদীর বুক ছুঁয়ে আসা হাওয়া আর আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘ মিলেমিশে যেন অন্য এক আবহ তৈরি করে।
বাদাম বিক্রেতা আব্দুল করিম বলেন, ‘আমার জন্ম এই চরেই। ছোটবেলা থেকে কাশবনে খেলেছি। কয়েক বছর ধরে মানুষ এখানে ভিড় করছে। বিকেল হলেই প্রচুর লোক আসে, ছবি তোলে, ভিডিও করে।’
বিকেলের সোনালি আলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেলে কাশবনের আবহ আরও রূপকথার মতো হয়ে ওঠে। দূরে আকাশে চাঁদ উঁকি দেয়, কখনো মেঘে আড়াল হয়, আবার নদীর জলে ছড়িয়ে পড়ে টুকরো টুকরো রুপালি আলো। যেন প্রকৃতি নিজেই মঞ্চ সাজিয়েছে এক মায়াময় উৎসবের।
স্থানীয়রা জানান, ভাদ্র মাসের শেষ দিকে কাশফুল ফোটে এবং কার্তিক মাস পর্যন্ত থাকে। এ সময় পুরো এলাকা সাদা হয়ে যায়। তাই শরতের এই সময়টি স্থানীয়দের কাছে এক অনন্য উৎসবের মতো।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন