গুঞ্জন সত্যি করে প্রথমবারের মতো স্ক্রিনওয়ালা অগমেন্টেড রিয়ালিটি বা এআর স্মার্টচশমা উন্মোচন করল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্ট মেটা। এসব চশমা ব্যবহারকারীরা বাস্তব জগতের ডিজিটাল তথ্য দেখতে সাহায্য করবে, ঠিক যেন চোখের সামনেই ভেসে উঠছে সবকিছু। মেটার প্রথম স্ক্রিনওয়ালা এআর স্মার্টচশমার নাম ‘মেটা রে ব্যান ডিসপ্লে’। এর দাম সাতশ ৯৯ ডলার। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে এসব চশমা প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু নির্দিষ্ট দোকানে পাওয়া যাবে। এসব দোকানের মধ্যে রয়েছে বেস্ট বাই, লেন্সক্রাফটার, রে-ব্যান ও ভেরাইজন। ২০২৬ সালের শুরু থেকে এসব চশমা কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি ও যুক্তরাজ্যেও পাওয়া যাবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট।
প্রথমবারের মতো ‘রে ব্যান ডিসপ্লে’
মেটা বলেছে, এসব রে-ব্যান চশমার ডিসপ্লেতে রয়েছে একটি ক্যামেরা, অডিও সিস্টেম, স্বচ্ছ হেডস-আপ ডিসপ্লে বা এইচইউডি। এ ডিসপ্লের মাধ্যমে ব্যবহারকারী চোখের সামনে টেক্সট চ্যাট দেখতে ও উত্তর দিতে, এআই অ্যাসিস্ট্যান্টের সঙ্গে কথা বলতে, দিকনির্দেশনা বা ন্যাভিগেশন পেতে এবং ভিডিও কল করতে পারবেন। চশমাটি হাতের ইশারায় নিয়ন্ত্রণ করা যায়, যেমন আঙুল দিয়ে হালকা সোয়াইপ করে চ্যাটিংয়ের উত্তর টাইপ করতে পারবেন ব্যবহারকারীরা। প্রতিটি চশমার সঙ্গে বিশেষ এব ইএমজি রিস্টব্যান্ড রয়েছে, যার নাম ‘মেটা নিউরাল ব্যান্ড’।
এ ব্যান্ড ব্যবহার করে চশমার মাধ্যমে এসব ইন্টারঅ্যাকশন সম্ভব হবে। তবে বাস্তব ডেমোতে সবকিছু ঠিকঠাক কাজ করেনি। কারণ চশমাটির মাধ্যমে ‘কানেক্ট ২০২৫’ ইভেন্টের লাইভ প্রদর্শনী চলাকালীন একটি ফোন কল রিসিভ করা যায়নি। তবে, এ চশমা দিয়ে অন্যান্য কাজ ঠিকমতো হয়েছে। মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ দেখিয়েছেন কীভাবে এ চশমার মাধ্যমে স্পটিফাই চালু করে গান চালানো, ছবি তোলা ও দেখা যায় এবং এর সবচেয়ে উপকারী ফিচার হিসেবে, রিয়েল-টাইম সাবটাইটেল বা লাইভ কথার অনুবাদ ফিচারও রয়েছে।
এসব রে-ব্যান চশমার ডিসপ্লেতে রয়েছে একটি ক্যামেরা, অডিও সিস্টেম, স্বচ্ছ হেডস-আপ ডিসপ্লে বা এইচইউডি। এসব রে-ব্যান চশমার ডিসপ্লেতে রয়েছে একটি ক্যামেরা, অডিও সিস্টেম, স্বচ্ছ হেডস-আপ ডিসপ্লে বা এইচইউডি।
মার্কিন সামজিক যোগাযোগ মাধ্যম জায়ান্টটি বলেছে, এইচইউডি চশমার ডিসপ্লের মাধ্যমে ব্যবহারকারী ভিজুয়ালসহ ইন্টারঅ্যাকশন, বার্তা পাঠানো ও ভিডিও কল করা, ছবি দেখা ও জুম করা, হাঁটার সময় পথ নির্দেশনা দিতে, লাইভ ক্যাপশন ও অনুবাদ করতে এবং গান চালাতে পারবেন। ‘রে ব্যান ডিসপ্লে’ চশমাটি পরেই কানেক্ট ইভেন্টটি লাইভ করেছেন জাকারবার্গ। এসব চশমা ও রিস্টব্যান্ড পাওয়া যাবে কালো ও স্যান্ড রঙে এবং দুটি সাইজে। চশমাগুলোর বিভিন্ন লেন্স আলোর সঙ্গে মিলিয়ে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বদলায়, যেমন- রোদে গেলে গাঢ় আর ঘরে এলে হালকা হয়ে যায়। জাকারবার্গ বলেছেন, ‘রে ব্যান ডিসপ্লে’ চশমার ডিসপ্লে ‘অত্যন্ত হাই রেজ্যুলেশন’-এর।
এর ডিসপ্লের মান এইচইউডি, যা পুরোপুরি রঙিন ও প্রতি দৃষ্টিকোণের ডিগ্রিতে ৪২ পিক্সেল, সে তুলনায় ‘মেটা কোয়েস্ট ৩এস’-এ রয়েছে কেবল ২০ পিক্সেল প্রতি ডিগ্রি। এসব চশমা ছয় ঘণ্টা চালানো যাবে এবং চার্জিংসহ ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত চলবে। এদিকে, হাতে পরা নিউরাল ব্যান্ড চলবে ১৮ ঘণ্টা এবং ভিজলে বা পানিতে পড়লেও ক্ষতি হবে না। ইভেন্টটিতে মোট তিনটি নতুন স্মার্টচশমার ঘোষণা দিয়েছে মেটা। এ তিনটি স্মার্টচশমা হচ্ছে দ্বিতীয় প্রজন্মের ‘রে ব্যান মেটা’, যেটি আগের মডেলের আপডেটেড সংস্করণ। আরেকটি হচ্ছে ‘ওকলে মেটা ভ্যানগার্ড’, যেটি স্পোর্টস চশমা। সবশেষ তৃতীয়টি হচ্ছে কোম্পানিটির নতুন পণ্য ‘মেটা রে ব্যান ডিসপ্লে’।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন