কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শিশুর গলায় অস্ত্র ধরে মাকে গণধর্ষণ ও ২ লাখ টাকার সম্পদ লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত সোমবার রাতে থানায় মামলা হলে দৌলতপুর থানা পুলিশ তিনজন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ ও ধর্ষিতার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৫ সেপ্টেম্বর রাত ২টার দিকে উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের কায়ামারী গ্রামের রুশুল মহলদারের ছেলে লাবু (৩৬), তারিক (৪২) ও সুবোল (৩৫)সহ ৭-৮ জনের একটি সংঘবদ্ধ সশস্ত্র দুর্বৃত্ত প্রতিবেশী সেলিম মহলদারের বাড়িতে জোরপূর্বক প্রবেশ করে তার ছেলে রানা (২৫) ও তার ছোট ভাই রাহুলকে (২০) মুখ, হাত-পা বেঁধে রানার স্ত্রী এক সন্তানের জননী রিতু খাতুনকে (১৮) ধর্ষণ করতে চাইলে সে বাধা দেয়। পরে তার ৩ বছরের শিশু সন্তানের গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে গৃহবধূ রিতুকে জোরপূর্বক পালাক্রমে গণধর্ষণ করে লাবু, সুবোল ও তারিক। ধর্ষণ শেষে দুর্বৃত্তরা ঘরে থাকা স্বর্ণালংকারসহ প্রায় দুই লাখ টাকার সম্পদ লুট করে নিয়ে যায় এবং যাওয়ার সময় এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায়।
পরে পরিবারের লোকজন চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে এবং রিতুকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে দৌলতপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সুস্থ হওয়ার পর রিতু বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন, যার নং-২৫ এবং তার শ্বশুর সেলিম মহলদার বাদী হয়ে হামলা ও লুটপাটের মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ওই রাতেই দৌলতপুর থানা পুলিশ ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষক লাবু, সুবোল ও তারিককে গ্রেপ্তার করে পরদিন কারাগারে পাঠায়। পরে রিতুকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে পুলিশ।
ধর্ষণ ও ডাকাতির বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি মো. সোলাইমান শেখ বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরাধের সাথে জড়িত কেউ রক্ষা পাবে না। অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং বাকি সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, ধর্ষণকারী সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা একই রাতে পার্শ্ববর্তী আব্দুর রাজ্জাক কলেজপাড়া এলাকায় মৃত জেসের মন্ডলের ছেলে জহুরুল ইসলামের বাড়িতে হানা দিয়ে অস্ত্রের মুখে বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে ফেরার পথে সেলিম মহলদারের বাড়িতে প্রবেশ করে গৃহবধূকে গণধর্ষণ ও লুটের ঘটনা ঘটায়। এমন পাশবিক ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন