- দাশুড়িয়া ও ঈশ্বরদী শাখা থেকে টাকা তোলার পর প্রাইভেট কারে রওনা
- আনসার সদস্যকে মাঝপথে নামিয়ে দেন, এরপর থেকে খোঁজ নেই
- ব্যাংক কর্তৃপক্ষের জিডির ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ
পাবনার ঈশ্বরদীতে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে জনতা ব্যাংকের পাকশী শাখার ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহ নিখোঁজ হয়েছেন। গত রোববার দুপুরে ব্যাংকের অর্থ নিয়ে বের হওয়ার পর থেকে তার কোনো খোঁজ মিলছে না। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী থানায় একটি জিডি করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। নিখোঁজ ব্যাংক ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহ (৪৫) ঈশ্বরদী পৌর শহরের হাসপাতাল রোডের আব্দুল গফুর শেখের ছেলে।
জনতা ব্যাংক ঈশ্বরদী করপোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. মোহছানাতুল জানান, পাকশী শাখার ব্যবস্থাপক খালেদ সাইফুল্লাহ গত শনিবার টেলিফোনে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার প্রয়োজনের কথা জানান। গত রোববার সকালে ক্যাশ রেমিট্যান্সের জন্য তিনি ঈশ্বরদী করপোরেট শাখায় আসেন। বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে খালেদ সাইফুল্লাহ জনতা ব্যাংকের দাশুড়িয়া বাজার শাখা থেকে ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। পরে ঈশ্বরদী করপোরেট শাখায় এসে বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে পাকশী শাখা থেকে আরও ১ কোটি টাকা অর্থ গ্রহণ করেন। টাকা হস্তান্তরের সময় আনসার সদস্য মাহবুব তার সঙ্গে ছিলেন। প্রয়োজনীয় ভাউচার ও রেজিস্ট্রারে স্বাক্ষর সম্পন্ন করার পর বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে খালেদ সাইফুল্লাহ এবং আনসার সদস্য মাহবুব ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা নিয়ে পাকশী শাখার উদ্দেশ্যে প্রাইভেট কারে রওনা দেন। গাড়িটির চালক ছিলেন মো. ইসমাইল হোসেন। তবে তিনি শাখায় পৌঁছে টাকা জমা দেওয়ার কথা জানালেও এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বিকাল পাকশী শাখার সহকারী ম্যানেজারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে জানা যায়, খালেদ সাইফুল্লাহ তখনো শাখায় পৌঁছাননি।
এ অবস্থায় আতঙ্কিত হয়ে ব্যাংক কর্মকর্তারা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে যোগাযোগ করে ঈশ্বরদী থানায় জিডি করেন। জনতা ব্যাংকের দাশুড়িয়া শাখার ব্যবস্থাপক শাহিনুর রহমান জানান, বেলা ১১টা ১৫ মিনিটে পাকশী শাখার ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহ দাশুড়িয়া শাখা থেকে ৩০ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। লাপাত্তা ওই ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে থাকা আনসার সদস্য মাহবুব বলেন, ‘ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঈশ্বরদী ব্র্যাক ব্যাংকের সামনে এসে তিনি আমাকে প্রাইভেট কার থেকে নামিয়ে দেন। আমি তার কথামতো গাড়ি থেকে নেমে পড়ি। তিনি এরপর গাড়ি নিয়ে চলে যান।’ ম্যানেজার খালেদ সাইফুল্লাহর স্ত্রী দিলরুবা বেগম বলেন, ‘ব্যাংক কর্তৃপক্ষ থেকে আমার স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার খবরটি জানতে পেরেছি। তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তিনি স্বেচ্ছায় কোথাও গেছেন, নাকি কেউ তাকে গুম করেছে সেটি আমরা নিশ্চিত নই।’ ঈশ্বরদী থানার ওসি আব্দুন নূর জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ব্যাংকের টাকা উত্তোলনের বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তারা একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন