শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৫, ১১:১০ পিএম

বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস আজ

প্রতি ১ লাখে ১ জনেরও কম মনোরোগ বিশেষজ্ঞ

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৫, ১১:১০ পিএম

প্রতি ১ লাখে ১ জনেরও কম মনোরোগ বিশেষজ্ঞ

দেশে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার কাঠামো এখনো সীমিত। এখানে এখনো প্রতি ১ লাখ জনের জন্য গড়ে একজনেরও কম মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলোতে দুর্যোগ-পরবর্তী মানসিক সেবা কার্যত অনুপস্থিত। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালায় ‘মনোসামাজিক সহায়তা’ বিষয়টি এখনো প্রান্তিক অবস্থানে। এমন পরিস্থিতিতেই আজ দেশজুড়ে পালিত হতে যাচ্ছে বিশ^ মানসিক স্বাস্থ্য দিবস। ‘বিপর্যয় এবং জরুরি পরিস্থিতিতে পরিষেবাগুলোতে অনুমোদনে মানসিক স্বাস্থ্য’।

দিবসটি উদ্যাপনের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে, মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি এবং কুসংস্কার কমিয়ে মানুষের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য ও রোগ বিষয়ে ইতিবাচক ধারণা তৈরি করা। মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে দরকার একটি সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ এবং বৈশি^ক শান্তি। কাজে ব্যস্ত থাকলে মানুষের মন ভালো থাকে। আবার মন সুস্থ থাকলে কর্মজীবন হয় আনন্দমুখর। কর্মক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকলে যেমন মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে না, তেমনই মানসিক স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে কর্মদক্ষতা বিঘিœত হয়। বেকারত্ব যেমন নানা মানসিক সমস্যার জন্য দায়ি, কর্মস্থলের নানা নেতিবাচক বিষয়ের কারণেও মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়ে। অত্যধিক কাজের চাপ, ব্যক্তিগত ও পেশাগত জীবনের সমন্বয়হীনতা, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ যেমন নিরাপত্তাহীনতা, সহকর্মীদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা, একে অন্যকে নিচু করে দেখানোর প্রবণতা, কাজের যথাযথ স্বীকৃতি না পাওয়া, চাকরি হারানোর আশঙ্কা ইত্যাদি মানসিক স্বাস্থ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

দিবসটিকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার একটি হোটেলে ‘দুর্যোগ ও সংকটকালে মানসিক স্বাস্থ্য’বিষয়ক এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই অভিমত জানান। 

এ সময় এক প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলা হয়, বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় দুর্যোগ ও মানবিক সংকটের ঘনঘটা বেড়ে চলেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, ভূমিধস, অগ্নিকা-, মহামারি, বাস্তুচ্যুতি ও সংঘাত এসব দুর্যোগ মানুষের শারীরিক জীবনের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশের মতো একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশে প্রতিবছরই হাজার হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি, জীবিকা, প্রিয়জন হারায়। এই ক্ষতি শুধু বস্তুগত নয়, মানসিকভাবে বিধ্বংসী। দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ের শোক, ট্রমা, উদ্বেগ, হতাশা এবং ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তা অনেককে মানসিকভাবে ভেঙে ফেলে। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জাতীয় কাঠামোতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় মনোসামাজিক সহায়তা এখনো পর্যাপ্তভাবে অন্তর্ভুক্ত নয়। দুর্যোগে আক্রান্ত মানুষের জন্য চিকিৎসা, খাদ্য, আশ্রয় ইত্যাদি জরুরি সেবা যতটা অগ্রাধিকার পায়, মানসিক পুনরুদ্ধার সেবা ততটা গুরুত্ব পায় না।

প্রবন্ধে আরও বলা হয়, ২০২২ সালের সিলেটের ভয়াবহ বন্যার পর অনেক পরিবার উদ্বেগ, নিদ্রাহীনতা ও হতাশায় ভুগেছে। আর ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আগমনের সময় হাজারো মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে মানসিক অস্থিতিশীলতার শিকার হয়। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সমাজের সব শ্রেণির মানুষ মানসিক চাপে আক্রান্ত হয় ভয়, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, কর্মহীনতা ও শোকের কারণে। এসব প্রমাণ করে, দুর্যোগ ও সংকট শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, মানসিক স্বাস্থ্যও একটি বড় মানবিক সংকট। রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটকালীন মানসিক স্বাস্থ্য বাংলাদেশের মতো একটি দেশ যেখানে সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তন প্রায়ই সংঘাত, হঠাৎ সহিংসতা বা দীর্ঘ অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে ঘটে, সেখানে এই পরিস্থিতিগুলো মানুষের মানসিক স্থিতিশীলতাকে গভীরভাবে নাড়িয়ে দেয়।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহের শীর্ষ সমন্বয়কারী প্রতিষ্ঠান এডাব (অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট অ্যাজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ) কর্তৃক আয়োজিত এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির ঢাকা মহানগর সভাপতি কাজী বেবী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নির্বাহী পরিচালক, উৎস ও শিক্ষক নাট্যকলা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় মোস্তফা কামাল যাত্রা। বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন এডাব পরিচালক এ কে এম জসীম উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন, এডাবের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সৈয়দা শামীমা সুলতানা, নারীনেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু, বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক ফোরামের সদস্য নাসরীন গীতি। এ সময় বক্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দুর্যোগ ও সংকটে মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হন। মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে আমরা ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে উদাসীন, সামাজিক ট্যাবু কাজ করে। দেশের চার কোটি মানসিক রোগীর বিপরীতে সাইকোলোজিস্ট মাত্র ৪৬৫ জন। 

মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সভায় যেসব সুপারিশ তুলে ধরা হয় তা হলো : মানসিক স্বাস্থ্য আইন ২০১৮-এর সফল বাস্তবায়ন, ইউনিয়ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারিভাবে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, আশ্রয় কেন্দ্র ও পুনর্বাসন ক্যাম্পে মনোসামাজিক সাপোর্ট কর্নার স্থাপন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে কাউন্সিলর নিয়োগ এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!