শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৫, ১১:১৪ পিএম

ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতি 

প্রথম ধাপের চুক্তির পরও আশা-নিরাশার দোলাচল

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৫, ১১:১৪ পিএম

প্রথম ধাপের চুক্তির পরও আশা-নিরাশার দোলাচল

  • প্রথম ধাপে হামাস ও ইসরায়েল সম্মত হলেও পরবর্তী ধাপগুলোয় কি ঘটবে তা অনিশ্চিত
  • চুক্তি কার্যকর হলে, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার প্রশাসন, হামাসের ভবিষ্যৎ ও সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচি নিয়ে সমাধান হয়নি
  • আলোচনার মধ্যেও থামেনি গাজায় হামলা। সেনা প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছে ইসরায়েল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে গত বুধবার রাতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও হামাস। এটি কার্যকর হলে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হতে পারে। ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে হামাসের হামলা ও গাজায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ শুরুর দুই বছর পূরণের পরদিন মিশরে পরোক্ষ আলোচনার মাধ্যমে ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি কাঠামোর প্রথম ধাপে ঐকমত্য গঠিত হয়। ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে বলেন, ‘আমি গর্বের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ইসরায়েল ও হামাস আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে স্বাক্ষর করেছে। এতে খুব শিগগিরই সব বন্দি মুক্তি পাবে এবং সম্মত সীমারেখায় ইসরায়েল সেনা প্রত্যাহার করবেÑ যা এক দৃঢ় ও স্থায়ী শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ।’

চুক্তিটি বাস্তবায়িত হলে এটি হবে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সাফল্য। তবে ট্রাম্পের ঘোষিত চুক্তিতে অনেক বিষয় এখনও অস্পষ্ট, যা আগের শান্তি প্রচেষ্টার মতো ভেস্তেও যেতে পারে। এদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতি তথা শান্তিচুক্তির খবর আসার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকা এবং ইসরায়েলে আনন্দ উল্লাস করেন স্থানীয়রা। এতে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি এবং দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা গণহত্যার পর অবরুদ্ধ গাজায় ব্যাপক মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যদিও গাজা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে হামাস ও ইসরায়েল সম্মত হলেও পরবর্তী ধাপগুলোয় কি ঘটবে তা অনিশ্চিত। ফলে আশা-নিরাশার দোলাচলেই থাকতে হচ্ছে গাজাবাসীকে এবং হামাসের হাতে বন্দি ইসরায়েলিদের পরিবারগুলোকেও।  

এদিকে, ইসরায়েলি সেনারা ফিলিস্তিনি ভূখ- থেকে সরে যাওয়ার আগে নিরস্ত্রীকরণের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। আলোচনায় সংশ্লিষ্ট দুজন জানায়, সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচি ও পদ্ধতি নিয়েই মূল জটিলতা রয়ে গেছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়, ঈশ্বরের সাহায্যে আমরা সব বন্দিকে ফিরিয়ে আনব। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মন্ত্রিসভা বৈঠক ডেকে চুক্তি অনুমোদনের ঘোষণা দেন। হামাসও জানায়, যুদ্ধের অবসানে তারা একমত হয়েছে এবং এতে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও বন্দিবিনিময় অন্তর্ভুক্ত আছে। তবে সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রগুলোকে অনুরোধ করেছে, যেন ইসরায়েল পুরোপুরি যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করে।

ট্রাম্প জানান, তিনি সপ্তাহান্তে মিশর সফরে যেতে পারেন এবং বলেন, এটি আরব ও মুসলিম বিশ্ব, ইসরায়েল, আশপাশের দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এক মহান দিন। কাতার, মিশর ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের ধন্যবাদ জানাই।

মিশরের শারম আল শেখে অনুষ্ঠিত আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও তুরস্কের শীর্ষ প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ট্রাম্প পাঠিয়েছেন তার জামাতা জ্যারেড কুশনার ও বিশেষ প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফকে, আর ইসরায়েলের পক্ষে অংশ নেন কৌশলবিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার।

তবে চুক্তি কার্যকর হলে, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজার প্রশাসন, হামাসের ভবিষ্যৎ ও সেনা প্রত্যাহারের সময়সূচি নিয়ে এখনো সমাধান হয়নি।

হামাসের এক সূত্র জানায়, জীবিত বন্দিদের মুক্তি ইসরায়েলি সরকার চুক্তি অনুমোদনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শুরু হবে। নিহতদের দেহ উদ্ধারে আরও সময় লাগবে। ইসরায়েলি এক মুখপাত্র জানান, বন্দি মুক্তি শনিবার থেকে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নেতানিয়াহু ও ট্রাম্প ফোনে একে অপরকে ‘ঐতিহাসিক অর্জন’-এর জন্য অভিনন্দন জানান। নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে ইসরায়েলি পার্লামেন্টে ভাষণ দেওয়ার আমন্ত্রণও জানান।

যদি এই চুক্তি সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হয় তাহলে গাজা যুদ্ধ থামানোর আগের যেকোনো প্রচেষ্টার তুলনায় এবার দুই পক্ষ বেশি কাছাকাছি আসবে। এই যুদ্ধ গাজা থেকে ছড়িয়ে একটি আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নিয়েছে, এতে ইরান, ইয়েমেন ও লেবানন জড়িয়ে পড়েছে, ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা আরও গভীর হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক চেহারা পরিবর্তিত হয়ে গেছে।

ফিলিস্তিনি সূত্র জানায়, হামাস যে বন্দিদের মুক্তির তালিকা দিয়েছে, তাতে ফাতাহ নেতা মারওয়ান বারঘুতি ও পপুলার ফ্রন্টের প্রধান আহমেদ সাদাতের নাম রয়েছেÑ যারা ইসরায়েলে আজীবন কারাদ- ভোগ করছেন।

এদিকে ট্রাম্পের অনুরোধে ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান কিছুটা শিথিল করেছে, তবে বিমান হামলা পুরোপুরি বন্ধ করেনি। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ১০ জন নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর হামলার সময় আড়াইশজনকে জিম্মি করা হয়েছিল। দুই বছরের যুদ্ধে অনেক জিম্মি মারা পড়েছে, গত বছরের শেষদিকে হওয়া এক যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী অনেকে ছাড়াও পেয়েছে। তবে হামাসের হাতে এখনো ৪৮ ইসরায়েলি জিম্মি আছে এবং এদের মধ্যে ন্যূনতম ২০ জন জীবিত বলে অনুমান করা হচ্ছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং পরিস্থিতি মূল্যায়নের ভিত্তিতে, আইডিএফ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অপারেশনাল প্রস্তুতি শুরু করেছে।’ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে, সেনাবাহিনী বলেছেÑ তারা ‘নিকট ভবিষ্যতে সামঞ্জস্যকৃত মোতায়েন লাইনগুলোতে সেনা স্থানান্তরের প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আইডিএফ এখনো ওই এলাকায় মোতায়েন রয়েছে এবং যেকোনো অপারেশনাল পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত।’

বিষাদের মধ্যেও গাজায় উল্লাস

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষরের খবরে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে। চুক্তি স্বাক্ষরের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বুধবার রাতেই আনন্দ মিছিল বের করেন গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের বাসিন্দারা। কিশোর তরুণরা বাঁশি-খঞ্জনি-ড্রাম বাজিয়ে, নেচে গেয়ে উল্লাস শুরু করেন।  কেউ খুশিতে কাঁদছেন-হাততালি দিচ্ছেন, কেউ বাঁশি বাজাচ্ছেন, কেউ গান গাইছেন-নাচানাচি করছেন এবং চিৎকার করে বলছেন ‘আল্লাহু আকবর’।  

৫ সন্তানের মা ঘাদা এই খবর শোনার পর থেকে কাঁদছেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি কাঁদছি; কিন্তু এটা আনন্দের অশ্রু। মনে হচ্ছে, নতুন করে আবার আমাদের জন্ম হলো। আশা করছি, এই ভয়াবহ যুদ্ধের শেষ হচ্ছে।’

ঘাদা জানান, গাজার প্রধান শহর গাজা সিটির বাসিন্দা ছিলেন তিনি। যে বাড়িতে তারা থাকতেন, সেটি ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর গত ১৫ মাস ধরে পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ তাঁবুতে বসবাস করছেন ঘাদা।

ইমান আল কৌকা নামের এক তরুণী এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের আনন্দের দিন, আজ আমাদের দুঃখেরও দিন। এটা এমন দিন যার জন্য আমরা হাসবÑ আবার যুদ্ধে আমরা যাদের হারিয়েছি, যা যা হারিয়েছেÑ সেসব স্মরণ করে কাঁদব। আমরা শুধু আমাদের বন্ধু, স্বজন এবং বাড়িঘরই হারাইনি, আমরা আমাদের শহর হারিয়েছি। এই যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরায়েল আমাদের প্রাগৈতিহাসিক আমলে ঠেলে দিয়েছে।’

ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় বাড়িঘর হারিয়ে গত বছর খান ইউনিসের দেইর আল বালাহ এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন গাজার বাসিন্দা আহমেদ দাহমান। রয়টার্সকে তিনি জানান, ইসরায়েলি বাহিনীর বোমার আঘাতে বাড়িঘরের পাশাপাশি নিজের বাবাকেও হারিয়েছেন তিনি; কিন্তু তাকে দাফন করতে পারেননি। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাবার মরদেহ রেখেই নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটতে হয়েছে তাদের।

দাহমান বলেন, ‘অবশেষে গাজায় রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে এবং আমাদের জীবন রক্ষা পাচ্ছেÑ এটা আনন্দের খবর। তবে আমি যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে কিছুটা শঙ্কিত। আমরা যখন ফিরব, তখন দেখব যে কিছুই আর অবশিষ্ট নেই।  আমার বাবার লাশ ধ্বংসস্তূপের তলায় রেখে পালাতে বাধ্য হয়েছিলাম। বাড়ি ফিরে আমার প্রথম কাজ হবে বাবার দেহাবশেষ খুঁজে বের করে তার দাফন সম্পন্ন করা।’

এ ছাড়াও তেল আবিবের তথাকথিত ‘হোস্টেজেস স্কয়ারে’ উল্লাস করছিলেন ইসরায়েলিরা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আইনাভ জাউগাউকার, যার ছেলে মাতান এখনো হামাসের হাতে বন্দি থাকা শেষ কয়েকজনের একজন।
যা বলছেন ট্রাম্প

দুই বছর ধরে গাজায় আটকে থাকা ইসরায়েলি জিম্মিরা সোমবার মুক্তি পেতে পারেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।  গত বুধবার ফক্স নিউজের ‘হ্যানিটি’ অনুষ্ঠানে জিম্মি মুক্তির এ সম্ভাব্য তারিখ জানান। পরবর্তীতে গাজাকে নতুন করে গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি অন্য এক সাক্ষাৎকারে।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘শান্তি চুক্তির প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পর মানুষ একে অপরের সঙ্গে ভালোভাবে চলাফেরা করবে এবং গাজা পুনর্নির্মাণ হবে। তখন এক ভিন্ন পৃথিবী তৈরি হবে এবং গাজার জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করা হবে। তিনি বলেন, ‘গাজা আমাদের বিশ্বাসে অনেক বেশি নিরাপদ জায়গায় পরিণত হবে। এটি আবার গড়ে উঠবে।  আশপাশের দেশগুলোও গাজা পুনর্গঠনে সহায়তা করবে, কারণ তাদের বিপুল সম্পদ রয়েছে এবং তারা এটি ঘটতে দেখতে চায়। আমি ভীষণ আত্মবিশ্বাসী যে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে।’

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন, ইসরায়েল ও হামাস আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে ‘স্বাক্ষর করেছে’। এটি আরব ও মুসলিম বিশ্ব, ইসরায়েল, আশপাশের সব দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি মহান দিন। আমরা কাতার, মিশর ও তুরস্কের মধ্যস্থতাকারীদের ধন্যবাদ জানাই, যাঁরা আমাদের সঙ্গে কাজ করেছেন এই ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন ঘটনা সম্ভব করার জন্য। শান্তির দূতেরা ধন্য হোক!’

যা বলছেন বিশ্বনেতারা

এদিকে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যকার শান্তিচুক্তির প্রাথমিক ধাপে সম্মতির পর বিশ্বনেতৃবৃন্দ ডোনাল্ড ট্রাম্প, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, হামাসসহ সব পক্ষকেই ধন্যবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি গাজার সাধারণ মানুষের কল্যাণে দ্রুততম সময়ে এই চুক্তি বাস্তবায়নেরও কথা বলেন। 

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, দুই বছরের অসহনীয় দুর্ভোগের পর এটি সারা বিশ্বের জন্য গভীর স্বস্তির মুহূর্ত, বিশেষ করে জিম্মিদের পরিবার ও গাজার বেসামরিক জনগণের জন্য। চুক্তিটি অবিলম্বে ও পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, পাশাপাশি গাজায় জীবনরক্ষাকারী মানবিক সহায়তার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল আনসারি জানান, চুক্তির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নের শর্তাবলি নিয়ে মধ্যস্থতাকারীরা একমত হয়েছেন।  তিনি বলেন, এতে যুদ্ধের অবসান, বন্দি বিনিময় ও গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের ব্যবস্থা থাকবে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ান সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির পথে আনতে প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শনের জন্য আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা এই চুক্তিকে স্বাগত জানাই এবং আশা করি জিম্মিমুক্তি ও মানবিক সহায়তা গাজার জনগণকে স্বস্তি দেবে এবং টেকসই শান্তির পথ উন্মুক্ত করবে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এবিসি নিউজকে বলেন, দুই বছরেরও বেশি সংঘাত ও বিপুল প্রাণহানির পর এটি শান্তির পথে এক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এক বিবৃতিতে বলেন, মাসের পর মাস চলা ধ্বংস ও দুর্ভোগের পর এই অগ্রগতি এক ঝলক আশার আলো জ্বেলেছে।

এ ছাড়াও কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট হাভিয়ের মাইলি, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জি মেলোনিসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রধানগন গাজায় শান্তিচুক্তির প্রয়োজনীয়তা এবং দ্রুত বাস্তবায়নে বিবৃতি দেন। 

এ ছাড়াও জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দিমুক্তি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, সব পক্ষের উচিত চুক্তির শর্ত সম্পূর্ণভাবে মেনে চলা। সব বন্দিকে মর্যাদার সঙ্গে মুক্তি দিতে হবে এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হবে।

গুতেরেস আরও বলেন, জাতিসংঘ এই চুক্তির বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এবং দুই রাষ্ট্র সমাধানের দিকে ‘বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক পন্থা’ গড়ে তুলতে কাজ করবে।

এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া ক্যালাস একে ‘উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক অগ্রগতি’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এই চুক্তি বিধ্বংসী যুদ্ধের ইতি টানার বাস্তব সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ইইউ চুক্তির বাস্তবায়নে সহায়তা করতে প্রস্তুত।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!