বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


হাসান আরিফ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ১২:০৮ এএম

সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে গণঅভ্যুত্থানের সব ব্যয়

হাসান আরিফ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৬, ২০২৫, ১২:০৮ এএম

সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে  গণঅভ্যুত্থানের সব ব্যয়

  • মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীন নির্বাহী কমিটির মাধ্যমে পাঁচটি উপকমিটি কাজ করে
  • এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতেও কার্যকর নীতিনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হবে বলে মনে করা হচ্ছে

বিগত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কিত স্মৃতিস্তম্ভ  ও স্মরণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকার সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করেছে। সময়সীমা, প্রয়োজনীয়তা এবং সরকারি ক্রয়নীতির বিধান বিবেচনায় এই পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যাতে জাতীয় পর্যায়ের সব অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা যায়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো এই পদ্ধতিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ ও স্মারকচিহ্নসহ সব ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উপকরণসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান ও অনুমোদিত স্থানীয় সরবরাহকারীর মাধ্যমে সংগ্রহ করেছে।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহিদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, শহিদ স্মৃতিফলক স্থাপন এবং কবর ও সমাধিস্থল সংরক্ষণের কার্যক্রম নির্বাহী কমিটির তত্ত্বাবধানে চলছে। এই কাজগুলোতে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিস সমিতি সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তর কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। যার জন্য কোনো ধরনের দরপত্র আহ্বান না করে সরাসরি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় যৌথভাবে ১০টি জাতীয় পর্যায়ের সাংস্কৃতিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। এসব অনুষ্ঠানের পোস্টার, ব্যানার, প্রচারপত্র ও আলোকসজ্জার প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরকারি মুদ্রণালয় (বাংলাদেশ গভর্নমেন্ট প্রেস) এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর থেকে সরাসরি ক্রয় করা হয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জেলা প্রশাসনের অনুকূলে বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করে মাঠপর্যায়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় মঞ্চ, আলোকসজ্জা ও শব্দব্যবস্থা স্থানীয় নিবন্ধিত সরবরাহকারীর কাছ থেকে সরাসরি ক্রয়ের অনুমোদন দেয়। অর্থ বিভাগ নির্দেশনা দেয় যে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহ নির্ধারিত সীমার মধ্যে নিজ নিজ বাজেট থেকে ব্যয় সম্পন্ন করবে এবং সব ব্যয়ের হিসাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেবে।

সরকার মনে করছে, জুলাই-আগস্ট জাতীয় গণঅভ্যুত্থান স্মরণ কর্মসূচির বাস্তবায়নে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতির সুচিন্তিত প্রয়োগ সময়মতো কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সহায়তা করেছে। একই সঙ্গে প্রশাসনিক সমন্বয়, ব্যয়ের স্বচ্ছতা ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের মধ্য দিয়ে এটি দৃষ্টান্তমূলক সরকারি কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছে। সরকারি সূত্রে জানা যায়, এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে জাতীয় দিবস ও ঐতিহাসিক স্মারক উদযাপনের ক্ষেত্রেও একটি কার্যকর নীতিনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হবে।

সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ তাদের নির্বাহকৃত ব্যয়ের হিসাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দিয়েছে। অর্থ বিভাগ ব্যয়ের সার্বিক তদারকি করছে এবং প্রধান হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মাধ্যমে নিরীক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নির্বাহী কমিটির সময়ে সময়ে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ জাতীয় কমিটির সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে।

জুলাই মাসের শুরুতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীনে একটি নির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির অধীনে পাঁচটি উপকমিটি কাজ করে। প্রতিটি উপকমিটির সভাপতি ছিলেন সরকারের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা এতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এসব কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়ন করা হয়। এতে সংস্কৃতি, শিক্ষা, তথ্য, প্রশাসন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক দপ্তরসমূহ ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় করে।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রণীত মূল কর্মসূচি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অনুমোদনক্রমে সব মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনে পাঠানো হয়। মাঠপর্যায়ে জেলা প্রশাসন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক কর্মকর্তারা যৌথভাবে অনুষ্ঠানসমূহ বাস্তবায়ন করেন। অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থানের নির্দেশনা প্রদান এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় মাঠপর্যায়ের কার্যক্রমের জন্য প্রত্যেক জেলা প্রশাসনের অনুকূলে বিশেষ বরাদ্দ দেয়।

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত ১০টি জাতীয় পর্যায়ের কর্মসূচির মধ্যে ছিলÑ মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাট্যাভিনয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, কবিতা পাঠ ও দেশাত্মবোধক সংগীতানুষ্ঠান, শহিদদের স্মরণে আলোকসজ্জা ও স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন এসব অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্মসূচি উপলক্ষে স্মারক, পোস্টার ও তথ্যপুস্তিকা মুদ্রণ করে জেলা প্রশাসন ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বিতরণ করে।

সরকার মনে করছে এর মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা ও জাতীয় চেতনার বিকাশ হচ্ছে। তাদের ধারণা, জুলাই-আগস্ট স্মরণ কর্মসূচিতে সারা দেশে বিপুল জনসম্পৃক্ততা লক্ষ্য করা গেছে। স্কুল, কলেজ, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের জন্য রচনা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক উৎসব এবং শহিদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠান তরুণ প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ ও গণআন্দোলনের ইতিহাস সম্পর্কে গভীর আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!