ডিসেম্বরে নির্ধারিত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্যাকেজের পরবর্তী কিস্তি ছাড়ের আগে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করতে চায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিতে বর্তমানে সেখানে অবস্থানরত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ পরবর্তী সরকার আসার পর তাদের সঙ্গে পরামর্শ করতে চায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ তাদের এই সিদ্ধান্তে না সম্মতি দিয়েছে, না আপত্তি জানিয়েছে। আমাদের কোনো আর্থিক চাপ নেই। তাই এটি কোনো সমস্যা নয়। আমরা যা চাই তা হলো নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব, যাতে আমাদের নীতিগত অঙ্গীকার সঠিক পথে থাকে। গভর্নর আরও বলেন, অর্থ ছাড় পাওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়; গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পর্যালোচনার (রিভিউ) কাজ সম্পন্ন করা।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় এখন রিভিউ সম্পন্ন করা যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ, রিভিউয়ের সঙ্গে আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তাই তারা চাইছে পরবর্তী সরকারের সঙ্গে পরামর্শ শেষে রিভিউ সম্পন্ন করতে। ড. মনসুর জানান, আইএমএফের আর্টিকেল-৪ মিশন অক্টোবর মাসে আসবে। তারা আংশিকভাবে ঋণপ্যাকেজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে, তবে রিভিউ সম্পন্ন করবে না। চূড়ান্ত রিভিউ ফেব্রুয়ারিতে বোর্ডের সামনে উপস্থাপন করা হবে, যখন নির্বাচনও হবে।
আইএমএফের ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ প্রতিশ্রুতির মধ্যে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত প্রায় ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে। ডিসেম্বর মাসে পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের কথা রয়েছে, আর ষষ্ঠ কিস্তি নির্ধারিত আছে আগামী বছরের জুনে। প্রতিটি কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফ সাধারণত দুই সপ্তাহব্যাপী একটি মূল্যায়ন মিশন পাঠায়, যা নিরীক্ষণ করে ঋণগ্রহণকারী দেশ তাদের দেওয়া সংস্কারের শর্তগুলো কতটা বাস্তবায়ন করেছে। আগামী ২৯ অক্টোবর আইএমএফ মিশন ঢাকায় আসছে পঞ্চম কিস্তির মূল্যায়ন শুরু করতে। এ পর্যন্ত ৫৫০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে বাংলাদেশ পেয়েছে প্রায় ৩৬০ কোটি ডলার।
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন