প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদের ঐক্য জোটের যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা পুলিশের বাধায় প- হয়েছে। এ সময় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৮ জন। অন্যদিকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা বাস্তবায়নের দাবির আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা।
প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তি আন্দোলন: প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে গতকাল সোমবার যমুনা অভিমুখে পদযাত্রার কর্মসূচি ছিল। এর আগে প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। দুপুরে কর্মসূচি থেকে পদযাত্রা নিয়ে শিক্ষকরা যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিছু দূর এগিয়ে কদম ফোয়ারার সামনে পৌঁছলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। বাধা পেয়ে শিক্ষকরা প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক আটকে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। সেখান থেকে শিক্ষকদের ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আলোচনার উদ্দেশ্যে যান। অন্য শিক্ষকরা সড়কে অবস্থান নেন। আধাঘণ্টা পর পুলিশ সদস্যরা তাদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিতে গেলে বিকেল ৩টার দিকে সংঘর্ষের সূত্রপাত। সংঘর্ষে ৮ শিক্ষক আহত হন। আহতরা হলেনÑ গোলাম মোস্তফা (৪৫), আলেয়া আক্তার (৩৮), হাফেজ রবিউল ইসলাম (২৫), ইমন মিয়া (২৫), সোহাগ মিয়া (২৮), সুকান্ত বিশ্বাস (৩৬), মমতাজ বেগম (৩৫) ও রুদ্র (৩০)।
আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসা মিজানুর রহমান জানান, জাতীয়করণ ঘোষণার দাবিতে পুলিশের সংঘর্ষে তারা আহত হয়েছেন। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ ঐক্য জোটের আন্দোলনে আহত হয়ে আটজন ঢাকা মেডিকেলে জরুরি বিভাগে আসে। তাদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আন্দোলনরত একজন শিক্ষক বলেন, ‘আমরা নয় দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের যমুনা অভিমুখে পদযাত্রায় পুলিশ আটকে দিলে আমরা সড়কে অবস্থান নিই। এ সময় পুলিশ আমাদের বল প্রয়োগ করে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়।’
প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবির মধ্যে রয়েছেÑ অবিলম্বে সব বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তি সুনিশ্চিত করতে হবে; সব বিশেষ বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো সুনিশ্চিত করতে হবে; বিশেষ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপবৃত্তি ৩ হাজার টাকা নিশ্চিত; শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিলসহ শিক্ষা উপকরণ, খেলাধুলা সরঞ্জাম প্রদান ও থেরাপি সেন্টার বাস্তবায়ন; ছাত্র-ছাত্রীদের ভোকেশনাল শিক্ষা কারিকুলামের আওতায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও পুনর্বাসন সুনিশ্চিত এবং সব চাকরি ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নির্ধারিত কোটা নিশ্চিত করতে হবে।
ইবতেদায়ি শিক্ষক আন্দোলন:
এদিকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা বাস্তবায়নের দাবির আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। তারা জানিয়েছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাব না।
এর আগে শিক্ষকরা সকাল থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান করে আসছিলেন শিক্ষকরা। একই সঙ্গে তারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিদপ্তরের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জন্য আলাদা অধিদপ্তর স্থাপন করাসহ পাঁচটি দাবি জানিয়েছিলেন। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
কর্মসূচিতে শিক্ষকরা বলেন, মাদ্রাসা জাতীয়করণের ফাইল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এমপিওভুক্ত পর্যায়ে আছে, যা প্রধান উপদেষ্টার সই হওয়ার পর এমপিওভুক্ত হবে। কিন্তু গত ৩ মাস যাবৎ তা স্বাক্ষর না হওয়ায় শিক্ষকরা হতাশ। অনুদানভুক্ত ও অনুদানবিহীন সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্তির জন্য অতিদ্রুত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার আহ্বান জানান তারা।
ইবতেদায়ি শিক্ষকদের দাবি হচ্ছেÑ অনুদানভুক্ত ও অনুদানবিহীন সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ২৮ জানুয়ারি সরকারের ঘোষিত পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন; শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এমপিওভুক্তির জন্য যাচাই-বাছাই করা ফাইলগুলো দ্রুত অনুমোদন করে প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ; স্বীকৃতিপ্রাপ্ত অনুদানবিহীন সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার এমপিও আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ব্যবস্থা করা। ৪. প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসায় প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি করা; প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিদপ্তরের মতো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার জন্য আলাদা অধিদপ্তর স্থাপন করা।
        
                            
                                    
                                                                
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
                                    
                                    
                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                            
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন