দীর্ঘ দুই মাস ফ্রিজে সংরক্ষণের পর অবশেষে সেই খুলি লাগানো হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী মামুন মিয়ার মাথায়। চবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর সংঘর্ষে গুরুতর আহত মামুনের মাথায় সফলভাবে এই প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
গত শনিবার নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালে তার খুলির অংশ প্রতিস্থাপন করা হয়। বর্তমানে তিনি সুস্থ রয়েছেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, মামুনের স্বজন ও সহপাঠীরা সবাই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।
একই সংঘর্ষে আহত চবির আন্তর্জাতিক বিভাগের মাস্টার্স শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমও এখন সম্পূর্ণ সুস্থতার পথে। দুজনই বর্তমানে পার্কভিউ হাসপাতালের কেবিনে চিকিৎসাধীন।
পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এটিএম রেজাউল করিম বলেন, ‘মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দুই শিক্ষার্থীকে আমাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আল্লাহর রহমত ও চিকিৎসকদের আন্তরিকতায় তারা এখন সুস্থ। মামুনের মাথায় সফলভাবে খুলি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তিনি এখন স্বাভাবিকভাবে কথা বলছেন। চিকিৎসাটা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল কিন্তু আমাদের টিম সর্বোচ্চটা দিয়েছে।’
গত ৩০ আগস্ট রাতে এক তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গ্রামবাসীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। এতে চবির অন্তত ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। আহত হন গ্রামবাসীর অনেকে। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৮টি বাস ও ৯টি অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালসহ নগরের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তাদের মধ্যে গুরুতর আহত মামুন মিয়া ও ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমকে প্রথমে চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে দ্রুত অস্ত্রোপচারের জন্য পার্কভিউ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেদিন রাতেই তাদের অস্ত্রোপচার হয়। মামুনের মাথার খুলি তখন অপারেশনের মাধ্যমে আলাদা করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। চমেক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মু. ইসমাঈল হোসেন জানান, ‘দুই মাস পর মামুনের মাথার খুলি সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এখন তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ। সায়েমের একটি পা অবশ হয়ে যাওয়ায় তাকে থেরাপি দেওয়া হচ্ছে, তিনিও ভালো আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘হামলার সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মামুনের ব্রেইনের পেছনের অংশে আঘাত করা হয়েছিল। অপারেশনের সময় তার মাথা থেকে ১৩টি হাড়ের টুকরো বের করা হয়।’
উল্লেখ্য, মাথার খুলি সংরক্ষণের এমন ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। ২০২১ সালের ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাহাদি আকিবের মাথার খুলি অপারেশনের পর সংরক্ষণ করা হয়েছিল। পরে তার খুলিও প্রতিস্থাপন করা হয়, যা তখন দেশজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়।
        
                            
                                    
                                                                
সর্বশেষ খবর পেতে রুপালী বাংলাদেশের গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন
                                    
                                    
                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                                                                                    
                            
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
       
আপনার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মতামত লিখুন