শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০৬:৩৯ এএম

গাজায় হামাসের সঙ্গে ‘চুক্তি’

প্রশাসন সামলাবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ

ভিনদেশ ডেস্ক

প্রকাশিত: নভেম্বর ৭, ২০২৫, ০৬:৩৯ এএম

প্রশাসন সামলাবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ

ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) সঙ্গে একটি ‘অস্থায়ী চুক্তিতে’ পৌঁছেছে। এই চুক্তির আওতায় গাজার প্রশাসন সামলাবে রামাল্লায় অবস্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের একটি অস্থায়ী কমিটি। গত মঙ্গলবার হামাস নেতা মুসা আবু মারজুক কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে এসব কথা বলেন। মুসা আবু মারজুক বলেন, এই কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের একজন মন্ত্রী। আর এই কমিটি গাজার সীমান্ত পারাপার ও নিরাপত্তা বাহিনী তত্ত্বাবধান করবে। তবে ওয়াশিংটন এ বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে কি না, তা তিনি স্পষ্ট করেননি। আবু মারজুক আরও বলেন, তেল আবিব গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের অনুমতি দিতে অস্বীকার করছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত খসড়া পরিকল্পনার বিপরীত। কারণ, সেখানে গাজায় আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে তোলা হয়েছিল। হামাসের এই নেতা বলেন, ‘এই বিষয়ে এখনো দীর্ঘ আলোচনা প্রয়োজন।’ মারজুক নিশ্চিত করেছেন, আন্তর্জাতিক ওই নিরাপত্তা বাহিনীর দায়িত্ব ও ক্ষমতা নিয়ে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে। আর এটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত ‘শান্তি পরিকল্পনা’র একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। হামাসের নিরস্ত্রীকরণ প্রসঙ্গে মারজুক বলেন, ‘গাজার মাটিতে হামাসই কার্যত নিয়ন্ত্রণে আছে। যদি তাদের নিরস্ত্র করা হয়, অন্য গোষ্ঠীগুলোর অস্ত্র হাতে উঠবে। যেমন ইরাকে সেনাবাহিনী বিলুপ্ত হওয়ার পর বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে, আল-কায়েদা আর আইএসের উত্থান ঘটে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এতে স্থিতিশীলতা আসবে না, বরং যুদ্ধবিরতি বা অন্য কোনো চুক্তি বাস্তবায়ন আরও কঠিন হবে। গাজায় কোনো শূন্যতা নেই, যেকোনো বিকল্প বাহিনী অবশ্যই ফিলিস্তিনিদের দ্বারা গঠিত ও তাদের সম্মতিতে হতে হবে, যাতে কোনো অভ্যন্তরীণ সংঘাত না হয়।’ এর আগে হামাস ও পিএ-এর ফাতাহ দল মিসরে বৈঠক করে কিছু প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছিল। তবে সেসব চুক্তি বাস্তবে কীভাবে কার্যকর হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ট্রাম্পের পরিকল্পনায় গাজায় একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের অন্তত দুই বছর মেয়াদি ‘প্রশাসন’ পরিচালনার প্রস্তাব রয়েছে, যা পরে বাড়ানো যেতে পারে। ওয়াশিংটনের খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, পিএ শুধু তখনই গাজার প্রশাসন নিতে পারবে, যখন তারা ‘সংস্কার কর্মসূচি সন্তোষজনকভাবে সম্পন্ন করবে’ এবং ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন ‘বোর্ড অব পিস’ থেকে ‘চূড়ান্ত অনুমোদন’ পাবে। তবে কিছু আরব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিকল্পনার কয়েকটি অংশ প্রত্যাখ্যান করেছে। এর মধ্যে রয়েছে গাজাকে সম্পূর্ণভাবে নিরস্ত্র করা এবং হামাসকে অস্ত্র ত্যাগে বাধ্য করার শর্ত। পশ্চিমা কূটনীতিকদের উদ্ধৃত করে আই ২৪ নিউজ জানিয়েছে, আরব দেশগুলো এই ধারা মেনে নিতে রাজি নয়।

এক দিন খেলে আরেক দিন না খেয়ে থাকি। খুব সাধারণ খাবার খেয়েই কোনোরকমে বেঁচে আছি, যেসব খাবারের সাথে এখানকার মানুষ আগে পরিচিত ছিল না।

দিনে গড়ে ৬০০ ত্রাণবাহী ট্রাক গাজায় ঢুকতে দিতে কাজ করছে বলে ইসরায়েল দাবি করছে, খাদ্যসংকটের জন্য দায়ী করছে গাজার শাসকদল হামাসকে। অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে হামাস বলছে, ইসরায়েলের বাধায় দিনে দেড়শর বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক ঢুকতে পারে না উপত্যকায়। এ অবস্থায় দুর্ভোগ কমাতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করছে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা, জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র আবির ইতেফা বলেন, ১৬ লাখ মানুষের প্রতি বেলার পর্যাপ্ত খাবার নিশ্চিত করা জরুরি। এ জন্য পূর্ণ কার্যক্ষমতা দরকার আমাদের। দ্রুত কাজ এগিয়ে নিতে জরুরি সব কিছুই করছি আমরা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়ছি। শীতের মাস আসছে। মানুষের ক্ষুধাই দূর করা যায়নি। সব কিছুর চাহিদা তুঙ্গে।

অমানবিক এমন পরিস্থিতিতেই অস্ত্র বিরতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দক্ষিণাঞ্চল ধ্বংসে চলমান স্থল অভিযানের মধ্যেই উপত্যকাজুড়ে বুধবার ব্যাপক বোমা ও বিমান হামলা শুরু করে সেনাবাহিনী। ফিলিস্তিনি নিপীড়নের মধ্যেই গাজা উপত্যকায় দুই বছরের জন্য আন্তর্জাতিক বাহিনীর অধীনে অন্তর্বর্তী শাসনব্যবস্থা গঠনে জাতিসংঘকে আদেশ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র, বলছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত দুই পৃষ্ঠার নথি পৌঁছায় রয়টার্সের হাতে, যেখানে বলা হয়, জাতিসংঘে উপস্থাপনের জন্য প্রণীত খসড়া প্রস্তাব সংস্কারে কাজ চলছে বিভিন্ন দেশের সাথে। যদিও নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবটি বণ্টন করা হয়নি, জানিয়েছেন কূটনীতিকরা।

এদিকে, ইসরায়েল উপেক্ষা করলেও অস্ত্র বিরতির শর্ত পূরণ অব্যাহত রেখেছে হামাস। গাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে আরেক জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের পর আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেড ক্রসের মাধ্যমে ইসরায়েলের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে মরদেহটি। পরিচয়ও শনাক্ত করেছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।

অন্যদিকে, অবরুদ্ধ পশ্চিম তীরেও ফিলিস্তিনিদের ওপর সেনাবাহিনী ও দখলদারদের হামলা-ধরপাকড় চলছে। আটক করা হয়েছে অর্ধশতাধিক মানুষকে। ইসরায়েলি আগ্রাসনের জেরে বন্ধ আছে সেখানকার সব স্কুল।

গাজার মানচিত্র আর ফিলিস্তিনিদের স্মৃতিতে থাকা ভূখ- এখন নেই। যা অবশিষ্ট আছে তা কেবল ধূসর ধ্বংসস্তূপের এক বিস্তীর্ণ প্রান্তর। বেইত হানুন থেকে গাজা সিটি পর্যন্ত ১৮০ ডিগ্রি জুড়ে কোনো কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। দূরবর্তী গাজা সিটির কয়েকটি ভবন ছাড়া এখানে এমন কিছুই অবশিষ্ট নেই, যা দিয়ে একসময়কার হাজারো মানুষের বসতি এলাকাগুলোকে চেনা যায়। এই এলাকাটিই ছিল ইসরায়েলি স্থলবাহিনীর প্রবেশ করা প্রথম অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। হামাস এই অঞ্চলে আবার ঘাঁটি গাড়ার চেষ্টা করায় হায়েনা বাহিনী বারবার সেখানে প্রবেশ করেছে। ইসরায়েল কোনো সংবাদ সংস্থাকে গাজায় স্বাধীনভাবে রিপোর্ট করার অনুমতি দিচ্ছে না।

তবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসন সম্প্রতি বিবিসিসহ একদল সাংবাদিককে ইসরায়েলি বাহিনীর দখলে থাকা গাজা উপত্যকার একটি অংশ ঘুরিয়ে দেখিয়েছে। এই সংক্ষিপ্ত সফর ছিল অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত, যেখানে ফিলিস্তিনিদের সাথে বা গাজার অন্য কোনো এলাকায় প্রবেশের সুযোগ ছিল না। ইসরায়েলের সামরিক সেন্সরশিপ আইনের কারণে প্রকাশের আগে সামরিক কর্মীদের রিপোর্ট দেখাতে হয় সাংবাদিকদের। তবে বিবিসির দাবি, তারা তাদের সম্পাদকীয় নীতি বজায় রেখেছে। ধ্বংসের মাত্রা নিয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র নাদাভ শোশানি বলেন, ধ্বংস আমাদের লক্ষ্য নয়। লক্ষ্য হলো সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করা। প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই সুড়ঙ্গের মুখ ছিল কিংবা ছিল ফাঁদ পাতা অথবা রকেটচালিত গ্রেনেড (আরপিজি) বা স্নাইপার স্টেশন। তিনি আরও যোগ করেন, যদি আপনি দ্রুত গাড়ি চালান এক মিনিটের মধ্যে একজন ইসরায়েলি দাদি বা শিশুর বসার ঘরে ঢুকে যেতে পারেন। ৭ অক্টোবর এটাই ঘটেছিল।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!